ঢাকা-বরগুনা রুটের বাস বাকেরগঞ্জ থেকে বরগুনা যাওয়ার পথে আটকে দিচ্ছে বরিশালের বাস মালিক-শ্রমিকরা। এতে পদ্মা সেতুর সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ঢাকা-বরগুনা রুটের সড়ক পথের যাত্রীরা।  

জানা গেছে, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর ঢাকা থেকে বরগুনার সঙ্গে নিরবিচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু হলেও বাধার মুখে মির্জাগঞ্জ এবং আমতলী ফেরি পার হয়ে চলাচল করতে হচ্ছে এ রুটের বাস। এতে ৫ ঘণ্টার জায়গায় ঢাকা থেকে বরগুনা কিংবা বরগুনা থেকে ঢাকা পৌঁছাতে সময় লাগছে ১০ ঘণ্টারও বেশি। তাই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন এ রুটে চলাচলকারী যাত্রীরা। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দীর্ঘ এক যুগ ধরে বরগুনা-বাকেরগঞ্জ সড়ক দিয়ে চলাচল করে ঢাকা-বরগুনা রুটের যাত্রীবাহী কয়েকশ বাস।‌ সে সময় ঢাকা থেকে বরগুনার দূরত্ব ১৫ ঘণ্টার বেশি হলেও পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর সেই দূরত্ব কমে আসে পাঁচ ঘণ্টায়। তবে রুট পারমিট না থাকার অজুহাতে সম্প্রতি বরগুনা-বাকেরগঞ্জ সড়কে ঢাকা-বরগুনা রুটের বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে বরিশালের বাস মালিক-শ্রমিকরা। এতে মির্জাগঞ্জ এবং আমতলী ফেরি পার হয়ে বরগুনা থেকে ঢাকা এবং ঢাকা থেকে বরগুনা যাওয়া-আসা করতে হচ্ছে যাত্রীবাহী বাসগুলোকে। ফলে সময় লাগছে ১০ ঘণ্টার বেশি। দুর্ভোগ পোহানোর পাশাপাশি পদ্মা সেতুর সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এ রুটের যাত্রীরা। 

বরগুনা-ঢাকা রুটের সাকুরা পরিবহনের বরগুনা কাউন্টারের ব্যবস্থাপক নাসির মোল্লা বলেন, ৩ বছর ধরে এই সড়কে আমাদের বাস চলছে। পদ্মা সেতু চালুর পর আগস্ট মাসের শুরু থেকে বাস বন্ধ করে দেয় বরিশালের রুপাতলী বাস মালিক সমিতি। তারা বাকেরগঞ্জে পাহারা বসিয়ে চলাচল বন্ধ করে দেয়। ঢাকা-বাকেরগঞ্জ-বরগুনা বাস চলাচলে ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা লাগলেও বিকল্প রুটে ১০ ঘণ্টা সময় লাগছে। ফলে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন যাত্রীরা। পাশাপাশি পদ্মা সেতুর সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এ রুটের যাত্রীরা।

সুজন, রমিজ, আলতাফসহ কয়েকজন যাত্রী বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর বরগুনা-বাকেরগঞ্জ সড়ক দিয়ে বরগুনা থেকে ঢাকা পৌঁছাতে সময় লাগত পাঁচ ঘণ্টার মতো। কয়েক দিন ধরে এ সড়ক দিয়ে বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এতে পদ্মা সেতুর সুফল থেকে আমরা বঞ্চিত হচ্ছি। এখনও যদি ১০-১২ ঘণ্টা লাগে ঢাকা যেতে তাহলে স্বপ্নের পদ্মা সেতু হয়ে আমাদের লাভটা কী হলো?

বরগুনা-বাকেরগঞ্জ রুটে বাস চলাচলে বাধা দেওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বরিশালের রুপাতলী বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাওসার হোসেন শিপন বলেন, সরকারের নীতিমালা অনুযায়ী গাড়ি চলাচলের অনুমতি যেখানে আছে সেখান দিয়েই চলাচল করবে। তাদের রুট পারমিট আছে এক পথে, তারা যাবে অন্য সড়কে এটা তো ঠিক না।

বরগুনার জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, বরগুনার বাস চলাচলে বাধা দেওয়ার বিষয়টি শুনেছি। বরিশালের বাস মালিক সমিতির এই হয়রানির বিষয়টি আমি বিভাগীয় কমিশনার স্যারকে জানিয়েছি। তিনি বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখবেন।

খান নাঈম/এসপি