ভোটগ্রহণ শুরুর সময় থেকেই প্রতিটি কেন্দ্রে দেখা গেছে দীর্ঘ লাইন

প্রথমবারের মতো ময়মনসিংহের নান্দাইলে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ফলে ভোটারদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে এই ইভিএম। এ কারণে ভোটগ্রহণ শুরুর সময় থেকেই প্রতিটি কেন্দ্রে দেখা গেছে দীর্ঘ লাইন। তবে বয়স্ক ভোটাররা ইভিএম না বোঝার কারণে ভোটগ্রহণ বিলম্ব হচ্ছে। তপ্ত গরমে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে অনেকেই ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন। অনেক ভোটার দাঁড়িয়ে থাকতে কষ্ট হওয়ায় লাইনেই বসে পড়েছেন।

রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে নান্দাইল পৌরসভার আচারগাঁও উচ্চবিদ্যালয়, আচারগাঁও ফাজিল মাদ্রাসা, নান্দাইল পাইলট উচ্চবিদ্যালয়, নান্দাইল মডেল প্রাইমারি স্কুল ও আল আজাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘুরে এমন চিত্র চোখে পড়েছে।

দীর্ঘ দুই ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন বৃদ্ধা শামসুন্নাহার। কিন্তু তার সামনে থেকে যেন ভোটারের সংখ্যা কমছেই না। ফলে ক্লান্ত হয়ে লাইন ছেড়ে একটি ভবনের সামনে এসে বসে পড়েন তিনি। তার মতো একই অবস্থা রোমেলা, ফুলেছা, রেণু আক্তারসহ অনেকেরই।  জানতে চাইলে শামসুন্নাহার বলেন, ‘মেলাক্ষণ ধইরাই তো খাড়ইয়া রইয়া, আর তো পারতাছি না। লাইন থেইকা তো মানুষ কমেই না, ভোট দিয়াম কীরম কইরা।’

লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে ক্লান্ত হয়ে একটি ভবনের বারান্দায় বিশ্রাম নিচ্ছেন কয়েকজন ভোটার

আচারগাঁও উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিয়ে আসা ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আব্দুল খালেক (৬৫) বলেন, ‘মেশিনে ভোট তো আগে দিছি না, হেলেইজ্ঞার আমরার বুঝতে ইট্টু সমস্যা হইছে। কই টিপ দিউন লাগে জানি না। বাদে বুঝাইয়া দিলে ভোট দিছি।’

ভোটকেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, ইভিএম পদ্ধতিতে প্রথম ভোট হওয়ার কারণে বয়স্কদের জন্য খানিক বেগ পেতে হচ্ছে। তবে শেষমেশ ভোট দিতে উচ্ছ্বাসের কমতি নেই তাদের মাঝে। আবুল কালাম নামে এক ভোটার বলেন, ‘সারাজীবন তো সিল মাইরাই ভোট দিছি। এইবার মেশিনে টিপ দিয়া ভোট দিলাম, ভালাই লাগতাছে।’

বয়স্কদের কাছে ইভিএম কিছুটা ঝামেলা মনে হলেও তরুণ ভোটারদের ক্ষেত্রে একেবারেই উল্টো চিত্র। অনায়াসেই দিয়ে যাচ্ছেন তারা। সায়েম (২০) নামের এক তরুণ ভোটার বলেন, ‘নিজেকে অনেক সৌভাগ্যবান মনে হচ্ছে। সিল মারা ভোটের দিন শেষ। ডিজিটাল পদ্ধতিতে নিজের প্রথম ভোটটি দিলাম। পদ্ধতিটা খুবই সহজ এবং এই ভোটে বেশ স্বচ্ছতাও রয়েছে।’

নান্দাইল পৌর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে নৌকা প্রতীকে লড়ছেন তিনবারের নির্বাচিত মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া এবং বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন পৌর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আজিজুল ইসলাম পিকুল।

এছাড়াও ৯টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ৩০ জন ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর হিসেবে ১০ প্রার্থী ভোটে লড়াই করছেন।

সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ ফখরুজ্জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে ১২টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ চলছে। কেন্দ্রগুলোতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তৎপর রয়েছেন। এ পৌরসভায় ২৫ হাজার ৫২ জন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাচ্ছেন।

উবায়দুল হক/এমএসআর