নারায়ণগঞ্জে ৪ শ্রমিক হত্যায় ২ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৯ জনের যাবজ্জীবন
আদালতে আসামিরা
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার বক্তাবলীতে চার বাল্কহেড শ্রমিক হত্যা মামলায় দুইজনের মৃত্যুদণ্ড ও ৯ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে দণ্ডপ্রাপ্তদের ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক বেগম সাবিনা ইয়াসমিন এ রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় সাত আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
বিজ্ঞাপন
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- তাজু ইসলাম ও মহি ফিটার।
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- চাঁন মিয়া, দুলাল মিয়া, মজিবুর, শফিকুল, আব্দুল মান্নান, আরিফ, জলিল, সাইফুল ইসলাম ও দুলাল।
বিজ্ঞাপন
মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ফজলুর রহমান জানান, ২০০৮ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর শাহপরাণ নামে বাল্কহেড সিলেট থেকে পাথরবোঝাই করে মুন্সিগঞ্জে একটি সিমেন্ট কারখানায় যায়। সেখানে পাথর খালাস করে ২১ সেপ্টেম্বর বাল্কহেডটি ফেরার পথে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার বক্তাবলী এলাকায় ধলেশ্বরী নদীতে ইঞ্জিন নষ্ট হয়ে থেমে যায়। পরে বাল্কহেডটি মেরামত করার জন্য এর চালক দুই ফিডারম্যান তাজুল ইসলাম ও মহিউদ্দিনকে ফোন করে ডেকে আনেন।
মেরামত শেষে বাল্কহেডটি সচল হলে দুই ফিডারম্যান সেটি পরীক্ষা করার কথা বলে রাতে পূর্বপরিকল্পিতভাবে ডাকাতদের সঙ্গে যোগসাজশ করে বক্তাবলীর চরে নিয়ে থামিয়ে দেন। ওইদিন রাতের কোনো এক সময় দুই ফিডারম্যান সহযোগীদের সঙ্গে নিয়ে চালক নাসির মিয়া, কর্মচারী মঙ্গল, ফয়সাল ও হান্নানকে হাত-পা বেঁধে গলা কেটে হত্যা করে মরদেহ নদীতে ফেলে দেন।
পরে মেঘনা নদী থেকে হাত-পা বাঁধা ও গলাকাটা অবস্থায় নাসির ও মঙ্গলের মরদেহ উদ্ধার হলেও ফয়সাল ও হান্নান নামে অপর দুই শ্রমিক নিখোঁজ ছিলেন। বাল্কহেডটি বক্তাবলীর চর থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় পুলিশ জব্দ করে। এ ঘটনার পরদিন ২০০৮ সালের ২২ সেপ্টেম্বর বাল্কহেডটির মালিক এরশাদ মিয়া ফতুল্লা থানায় বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করলে পুলিশ দুই ফিডারম্যান তাজুল ইসলাম ও মহিউদ্দিনসহ সাত আসামিকে গ্রেপ্তার করে।
পরে আসামিরা হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়ে ও দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফতুল্লা থানার উপ-পরিদর্শক বদরুল আলম আসামিদের জবানবন্দির ভিত্তিতে ২০০৯ সালের ২৬ মার্চ ১২ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আদালত যুক্তিতর্ক ও ১৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে আজ এ রায় দেন
এদিকে রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে আসামিপক্ষের আইনজীবী কার্তিক চন্দ্র দাশ জানান, ন্যায় বিচারের জন্য তিনি উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।
রাজু আহমেদ/আরএআর