তৃতীয় লিঙ্গের দুজনকে চাকরি দিচ্ছেন রাজশাহীর ডিসি
বৈঠকে বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক আবদুল জলিল
কম্পিউটার অপারেটর ও অফিস সহায়ক পদে তৃতীয় লিঙ্গের দুইজনকে চাকরি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন রাজশাহীর জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবদুল জলিল। আগামী ১ মার্চ থেকেই কাজে যোগ দেবেন তারা। শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে তৃতীয় লিঙ্গের ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠককালে এ ঘোষণা দেন জেলা প্রশাসক। জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের জীবনযাপনের করুণ চিত্র তুলে ধরেন বক্তারা।
বৈঠকে উপস্থিত দিনের আলো হিজড়া সংঘের সভাপতি মোহনা মঈন বলেন, মাস্টাররোলে কম্পিউটার অপারেটর ও অফিস সহায়ক পদে দুজনের চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন জেলা প্রশাসক। তারা যাচাই-বাছাই করে যোগ্য দুজনের নাম জেলা প্রশাসককে দেবেন। তাদের চাকরি সরকারিভাবে স্থায়ী না হওয়া পর্যন্ত নিজ কার্যালয় থেকে মাসিক সম্মানি ভাতা দেবেন জেলা প্রশাসক।
বিজ্ঞাপন
বৈঠকে জেলা প্রশাসক আবদুল জলিল বলেন, তৃতীয় লিঙ্গ নামধারীদের চাঁদাবাজি বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়াও তৃতীয় লিঙ্গ গুরুদের তালিকা তৈরি করে তাদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। কারণ কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। কেউ বিশৃঙ্খলা করলে প্রচলিত আইনে তারও বিচার হবে।
তিনি আরও বলেন, কোনো জনগোষ্ঠীকে এগিয়ে নিতে হলে প্রথমে তার শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এই জনগোষ্ঠীর (তৃতীয় লিঙ্গ) সদস্যদের লেখাপড়ার জন্য আলাদা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন করতে হবে।
বিজ্ঞাপন
জেলা প্রশাসক বলেন, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের জন্য টেনিং সেন্টার করার পরিকল্পনা আছে। এরই অংশ হিসেবে কাশিয়াডাঙ্গায় এক একর জমি অধিগ্রহণের জন্য সরকারের কাছে প্রকল্প পেশ করা হয়েছে। প্রকল্পটি পাস হয়ে এলে দ্রুত কাজ শুরু হবে। সেই সঙ্গে উপজেলা পর্যায়ে সরকারের আশ্রয়ন প্রকল্পে কেউ যেতে চাইলে প্রতিটি উপজেলায় দুজনকে দুটি ঘর দেয়া হবে।
মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় ও গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডার অর্থায়নে আয়োজিত এই বৈঠকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শরিফুল হক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) কামারুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) ইফতেখায়ের আলম, সহকারী কমিশনার সানিয়া বিনতে আফজল, তানিয়া আক্তার লুবনা, মুমতাহিনা কবীর, বরেন্দ্র উন্নয়ন প্রচেষ্টার নির্বাহী পরিচালক ফয়েজুল্লাহ চৌধুরী, আপস-এর নির্বাহী পরিচালক আবুল বাশার পল্টু ও জাতীয় মহিলা পরিষদের রাজশাহী জেলা শাখার সভাপতি কল্পনা রায়, প্রকল্প সমন্বয়কারী আফসানা তানজুম ইরানী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ফেরদৌস সিদ্দিকী/আরএআর