নারায়ণগঞ্জে ডাকাতির ঘটনা বেড়েই চলছে। চলতি মাসেই জেলার আড়াইহাজার থানা এলাকায় বেশ কয়েকটি চাঞ্চল্যকর ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ গত ১৯ সেপ্টেম্বর রাতে ১২ সদস্যের একটি সশস্ত্র ডাকাত দল হাইজাদী ইউনিয়নের দুই গ্রামের আট বাড়িতে ডাকাতি করে। এ ঘটনায় জড়িত ৯ জনকে আটক করেছে র‌্যাব-১১।

গতকাল মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাতে আড়াইহাজারের হাইজাদী ইউনিয়নের সরাবদী এলাকায় অভিযান চালিয়ে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ধারালো অস্ত্র ও ককটেলসহ সংঘবদ্ধ আন্তজেলা ডাকাত চক্র কাশেম বাহিনীর ৯ জন সক্রিয় সদস্যকে আটক করা হয়। 

বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে র‌্যাব-১১ এর উপ-অধিনায়ক মেজর সানরিয়া চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এর আগে ডাকাতির ঘটনায় পাঁচজন আহত হন। ওই সময় ডাকাত দল স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা এবং অন্যান্য মালামাল নিয়ে পালিয়ে যায়। 

আটককৃতরা হলেন- আড়াইহাজারের গোপালদীর মৃত আবু তালেবের ছেলে ডাকাত সর্দার মো. আবুল কাশেম (৩৩), ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরের মৃত রীল মিয়ার ছেলে মো. বাবু (২৬), আড়াইহাজারের কাজীপাড়ার মো. আব্দুল হামিদের ছেলে মো. ওমর ফারুক (২৭), আড়াইহাজারের গোপালদীর মৃত মোস্তফার ছেলে মো. লিটন (২৪), আড়াইহাজারের মরুয়াদীর নূর মোহাম্মদের ছেলে মো. সবুজ (২৮), নরসিংদীর মাধবদীর চশড়িয়া এলাকার মৃত রশিদ মিয়ার ছেলে মো. দেলোয়ার হোসেন (২৮), আড়াইহাজারের জাকুরদিয়ার মো. আলমের ছেলে রুমন ভূইয়া (২৫), আড়াইহাজারের গোপালদীর মো. আলমের ছেলে মো. আশরাফুল (১৯) ও আড়াইহাজারের কলাগাছিয়ার আব্দুল করিমের ছেলে মো. জুয়েল রানা (২২)।

অভিযানে আটককৃতদের হেফাজতে থাকা ৭টি ককটেল, ৩টি ছুড়ি, ১টি কাটার, ২টি কোরাবারি, ৫টি টেঁটা, ১৩টি টর্চ লাইট, ১টি রূপার চেইন, নগদ ২৪ হাজার ৯০০ টাকা ও ৯টি মোবাইল উদ্ধার করা হয়।

তারা গত ১৯ সেপ্টেম্বর হাইজাদী ইউনিয়নের সরাবদী আতাদী চকের বাড়ি ও উদয়দী গ্রামের মোট আটটি বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় জড়িত বলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। ঘটনার পর থেকেই র‌্যাব-১১ এর গোয়েন্দা দল র‌্যাব সদর দপ্তর ইন্টেলিজেন্স উইংয়ের সহায়তায় ছায়া তদন্ত শুরু করে। তথ্য-উপাত্ত নিশ্চিত হওয়ার পর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ২০ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করতে সক্ষম হয়। আটকদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।

র‌্যাব জানায়, আটককৃতরা সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রের সক্রিয় সদস্য বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করেছেন। এই সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রটি এর আগেও যোগসাজশ করে পূর্ব পরিকল্পনামাফিক আড়াইহাজার থানা এলাকার বিভিন্ন বাড়িতে এবং আর্থিকভাবে সচ্ছল পরিবারগুলোকে টার্গেট করে ডাকাতি চালিয়ে আসছিল। গভীর রাতে আড়াইহাজারের বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে অতর্কিতভাবে হাজির হয়ে ধারালো অস্ত্র প্রদর্শন করে এবং ককটেল বিস্ফোরণের মাধ্যমে জনমনে ভয়ভীতি ও আতঙ্ক সৃষ্টি করে সাধারণ লোকজনদের জিম্মি করে ডাকাতি করে সিএনজি ও মোটরসাইকেলযোগে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।

এই ডাকাত দলের সদস্যরা ডাকাতির সময় জনসাধারণকে মারধর ও ছুরিকাঘাতসহ গুরুতর জখম করে। দীর্ঘদিন ধরে তারা নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানা এলাকায় বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে তাদের অন্যান্য সহযোগীদের নিয়ে ডাকাতি করে আসছিল। আটককৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। 

আরএআর