পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় করতোয়া নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় ৬ষ্ঠ দিনের মতো উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল। শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টা থেকে অভিযান চলছে। নৌকা ডুবিতে নিখোঁজ কারও সন্ধান না মিললেও উদ্ধার অভিযানে মিলেছে দুটি বাইসাইকেল। 

পঞ্চগড় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক শেখ মো. মাহবুবুল ইসলাম বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন।   

তিনি বলেন, আজ এখন পর্যন্ত কোনো মরদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তবে ঘটনাস্থল থেকে বিকেল ৪টার দিকে দুটি বাইসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে।

মাহবুবুল ইসলাম বলেন, সকাল ৬টায় আউলিয়ার ঘাট এলাকা থেকে তিনটি দলে বিভক্ত হয়ে প্রায় ৭০ জন উদ্ধারকর্মী এবং রংপুর, রাজশাহী ও কুড়িগ্রামের ডুবুরি দল নদীর ভাটি অংশে সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত রেখেছে। এছাড়াও দেবীগঞ্জ, খানাসামা ও বীরগঞ্জের ইউনিট কাজ করছে সংশ্লিষ্ট এলাকায়।

নৌকাডুবির ঘটনায় সর্বশেষ বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকেল পর্যন্ত ৬৯ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসনের জরুরি তথ্য কেন্দ্রের তথ্য মতে, ৬৯ জনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ডুবে যাওয়া নৌকাটিতে ঠিক কতজন যাত্রী ছিল, তার সঠিক তথ্য এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। তবে এখনো তিনজন নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানা গেছে।

নিখোঁজ তিনজন হলেন- দেবীগঞ্জ উপজেলার শালডাঙ্গা ইউনিয়নের ছত্রশিকারপুর হাতিডুবা গ্রামের মদন চন্দ্রের ছেলে ভুপেন ওরফে পানিয়া, বোদা উপজেলার সাকোয়া ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের খগেন্দ্রনাথের ছেলে সুরেন এবং পঞ্চগড় সদর উপজেলার ঘাটিয়ারপাড়া গ্রামের ধীরেন্দ্রনাথের মেয়ে জয়া রানী।

গত রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে উপজেলার মাড়েয়া বামনহাট ইউনিয়নের আউলিয়া ঘাট এলাকায় করতোয়া নদীতে নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। ঘটনার দিন ২৫ জন, দ্বিতীয় দিন ২৬ জন, তৃতীয় দিন ১৭ ও চতুর্থ দিন একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বোদা উপজেলার মাড়েয়া ইউনিয়নের করতোয়া নদীর অপরপাড়ে বদেশ্বরী মন্দিরে মহালয়া পূজা উপলক্ষে ধর্মসভার আয়োজন করা হয়। ওই ধর্মসভায় যোগ দিতে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা নৌকা যোগে নদী পার হচ্ছিলেন। তবে ৫০ থেকে ৬০ জনের ধারণক্ষমতার নৌকাটিতে শতাধিক যাত্রী ছিলেন। অতিরিক্ত যাত্রীর কারণে নদীর মাঝপথে নৌকাটি ডুবে যায়। কয়েকজন সাঁতরে তীরে আসতে পারলেও অধিকাংশই পানিতে ডুবে যায়।

নৌকাডুবিতে মৃত ৬৯ জনের মধ্যে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার ৪৫ জন, দেবীগঞ্জের ১৮ জন, আটোয়ারীর ২ জন, ঠাকুরগাঁওয়ের ৩ জন ও পঞ্চগড় সদরের ১ জন রয়েছেন। মৃত ৬৯ জনের মধ্যে নারী ৩০ জন এবং পুরুষ ১৮ জন। বাকি ২১ জন শিশু।

শরিফুল/আরএআর