চম্পা বেগম ওরফে রুমা ও তার শিশুকন্যা সূচী

বাবার কাছে যেতে চাওয়ায় মেয়েকে মেরে ফেললেন মা। একই সঙ্গে বগুড়া থেকে মেয়ের লাশ নিয়ে ময়মনসিংহে ফেলে যান তিনি।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, তিন বছর আগে স্বামী সাইফুল ইসলাম (৩০) ও শিশুকন্যা সূচীকে ফেলে জামালপুর থেকে বগুড়ায় চলে যান চম্পা বেগম ওরফে রুমা (২৬)। এরপর থেকে বগুড়া সদরের ঘুন্টিমোড় এলাকায় বসবাস করতেন। অন্যদিকে বাবা সাইফুলের কাছে থেকেই বড় হচ্ছিল ছয় বছরের সূচী।

এক মাস আগে হঠাৎ রুমা বগুড়া থেকে জামালপুরে এসে কাউকে না বলে দাদির কাছ থেকে সূচীকে নিয়ে বগুড়ায় চলে যান। কিন্তু বাবাকে ছেড়ে বগুড়ায় থাকতে চায় না সূচী।

সবসময় চাইতো যার কাছে বড় হয়েছে; সেই বাবার আদর পেতে, ফিরতে চাইতো বাবার কাছে। এতে মায়ের হাতে তাকে একাধিকবার মারধরের শিকার হতে হয়। 

পাঁচদিন আগে আবার মারধর করলে মাথায় গুরুতর আঘাত পায় সূচী। পরে বগুড়া হাসপাতালে ভর্তি করলে পরদিন তার মৃত্যু হয়। এরপর বাসযোগে লাশ নিয়ে ময়মনসিংহের মুক্তগাছায় একটি মসজিদের পাশে ফেলে পালিয়ে যান মা রুমা।

সোমবার (০১ মার্চ) ভোরে রুমাকে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করে ময়মনসিংহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। মঙ্গলবার (০২ মার্চ) আদালতে এমন জবানবন্দি দিয়েছেন রুমা।

সন্ধ্যায় ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ কামাল আকন্দ বলেন, ২৫ ফেব্রুয়ারি রাত পৌনে ৯টার দিকে মুক্তাগাছার পাড়াটুঙ্গী রহিমা জান্নাতুল জামে মসজিদের পাশ থেকে ওই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন তার পরিচয় পাওয়া যায়। ২৭ ফেব্রুয়ারি থানায় মামলা করেন শিশুটির বাবা সাইফুল ইসলাম। পুলিশ সুপারের নির্দেশে মামলাটি ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়। এরপর অভিযান চালিয়ে রুমাকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

ওসি শাহ কামাল আকন্দ বলেন, মঙ্গলবার ময়মনসিংহের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হাফিজ আল আসাদের আদালতে রুমাকে সোপর্দ করা হয়। আদালতে হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি।

উবায়দুল হক/এএম