হাঁসের দেখাশোনা করছেন এক খামারি

সুবু মিয়া। ১৫ বছর আগে মাত্র ১০০টি হাঁস নিয়ে শুরু করেছিলেন খামার। এখন তার খামারে হাঁসের সংখ্যা ১৫শ। তার খামারে কাজ করে সংসার চালান আরও পাঁচজন শ্রমিক। হাঁস পালন লাভজনক হওয়ায় সুবু মিয়ার মতো অনেকেই কাউয়াদিঘি, হাকালুকিসহ বিভিন্ন হাওরে গড়ে তুলেছেন হাঁসের খামার।

সুবু মিয়া ঢাকা পোস্টকে জানান, হাঁসের ডিম বিক্রি করে বছরে অনেক টাকা লাভ করতে পারি। কিন্তু হাঁস ডিম দেওয়া বন্ধ করলে আর্থিক সংকটে পড়ে যাই। তখন শ্রমিকদের মজুরি দিতে হিমশিম খেতে হয়। ওই সময় কেউ কোনো সহযোগিতা করেন না। 

কাউয়াদিঘি হাওরে গেলে চোখে পড়ে হাজার হাজার হাঁসের ঝাঁক। রাখাল যেমন গরুর পাল নিয়ে ছুটে চলে, তেমনি হাঁসের ঝাঁক নিয়ে ছুটে চলেছেন খামারিরা। দল বেঁধে এসব হাঁস মাছ বা জলজ প্রাণী কিংবা শেওলা খাচ্ছে। হাওরের মানুষ এই হাঁসের ডিম, বাচ্চা ও বড় হাঁস বিক্রি করেই জীবিকা নির্বাহ করেন। 

জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, মৌলভীবাজারে ৪৩২টি হাঁসের খামার রয়েছে। খামারগুলোতে মোট হাঁসের সংখ্যা ৭ লাখ ৪৮ হাজার ৫৭০টি। 

স্থানীয় লোকজন জানান, হাওরের হাঁসে চর্বি থাকে অনেক বেশি। তাছাড়া স্বাদ অন্য হাঁস থেকে আলাদা বলেই বেশ কদর আছে স্থানীয় বাজারে। এই হাঁসের ডিমেরও অনেক চাহিদা রয়েছে বাজারে। লাভজনক হওয়ায় হাওরপাড়ে এখন অনেকেই হাঁসের খামার করছেন। পাইকারি ক্রেতারা খামার থেকে ডিম সংগ্রহ করে নিয়ে যান দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।

খামারি রহিম বলেন, হাঁসগুলোকে আমরা পাঁচজন দেখাশোনা করছি। দিনে হাওরে নিয়ে গিয়ে খাইয়ে বিকেলে আবার ঘরে তুলি।

হাওরপাড়ের বাসিন্দা শামিম বলেন, দেখাদেখি অনেক মানুষই এখন হাওরে হাঁসের খামার গড়ে তুলতেছে। গত কয়েক বছরে কাউয়াদিঘি হাওরেই অনেক হাঁসের খামার তৈরি হয়েছে। এতে স্থানীয় অনেক মানুষ কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। এভাবে আরও খামার তৈরি হলে অনেক বেকার লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে।

স্থানীয় ব্যবসায়ী জুয়েল মিয়া বলেন, হাওরের খামারে উৎপাদিত ডিমের চাহিদা বাজারে অনেক বেশি। দামও পাওয়া যায় ভালো। তবে ডিমের সংকট থাকে সব সময়। এই ডিম পেলে আমরা বেশি দামে বিক্রি করতে পারি। ক্রেতার চাহিদাও বেশি থাকে।

এ বিষয়ে মৌলভীবাজার জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আব্দুস ছামাদ বলেন, হাওর অধ্যুষিত মৌলভীবাজারে হাঁস পালন এখন একটি সম্ভাবনাময় ব্যবসা। আমরা আমাদের পক্ষ থেকে তাদের সার্বিক সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়ে থাকি।

এসপি