নোয়াখালীতে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ যুবদল নেতা হুদা মো. আলমের মৃত্যুর ঘটনার পাঁচ বছর পর সাবেক পুলিশ সুপার মো. ইলিয়াস শরীফসহ চারজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলার আবেদন করেছেন নিহতের স্ত্রী খুরশিদা বেগম। 

রোববার (১৬ অক্টোবর) সকালে নোয়াখালী জেলা ও দায়রা জজ আদালতে তিনি মামলার এ আবেদন করেন। দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ নিলুফার সুলতানা বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড করে অভিযোগটি আমলে নিয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য রেখেছেন।

বাদীর পক্ষ নিয়ে আদালতে মামলার আবেদন করেন, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মাহফুজার রহমান ইলিয়াস ও অ্যাডভোকেট সাইফুর রহমান প্রামানিক।

অভিযুক্তরা হলেন- নোয়াখালীর সাবেক পুলিশ সুপার মো. ইলিয়াস শরীফ (বর্তমানে ডিআইজি), সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বেগমগঞ্জ সার্কেল) মো. শাহজাহান শেখ, বেগমগঞ্জ মডেল থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাজেদুর রহমান সাজিদ এবং ওই থানার সাবেক উপ-পরিদর্শক মো. জসিম উদ্দিন।

এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ২৩ আগস্ট সন্ধ্যায় অভিযুক্তরা বেগমগঞ্জের আলাইয়ারপুর ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক হুদা মো. আলমকে বিভিন্ন মামলার আসামি বলে সাদা পোশাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। পরে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে ওই রাতে ওসি বিভিন্ন মিডিয়ায় বক্তব্য দেন। তবে রাত ২টা থেকে আড়াইটার মধ্য অস্ত্র উদ্ধারের নামে গ্রেপ্তার হুদা মো. আলমকে হিংসার বশবর্তী হয়ে দাসপাড়া গ্রামে নিয়ে বন্দুকযুদ্ধের নামে গুলি করে হত্যা করে পুলিশ। পরদিন হাসপাতালে তার মরদেহ পাওয়া যায়।

মামলার বাদী খুরশিদা বেগম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার স্বামীকে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়। তারপর বন্দুকযুদ্ধের নামে তাকে হত্যা করা হয়। এতদিন আসামিরা নোয়াখালী পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বে থাকায় মামলা করার সাহস পাইনি। এখন তারা অন্যত্র বদলি হওয়ায় মামলার আবেদন করেছি।

মামলায় বাদীপক্ষের কৌঁসুলি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মাহফুজার রহমান ইলিয়াস ঢাকা পোস্টকে বলেন, আদালত মামলার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখেছেন। বিজ্ঞ বিচারক বাদীর জবানবন্দি নিয়েছেন। আমরা আদালতের প্রতি সন্তুষ্ট। আশা করি জুডিশিয়াল তদন্তের বিষয়টি বিজ্ঞ বিচারক গ্রহণ করবেন।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৩ আগস্ট নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে যুবদল নেতা  হুদা মো. আলমের (৩২) মৃত্যু হয়। সেসময় পুলিশ দাবি করেছিল, বন্দুকযুদ্ধে পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন এবং ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল, এক পাইপগান, তিনটি ছোরা, পাঁচটি রড ও গ্রিল কাটার যন্ত্র উদ্ধার করা হয়েছিল। নিহত  হুদা মো. আলম বেগমগঞ্জের ধীতপুর গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে এবং আলাইয়াপুর ইউনিয়ন যুবদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক ছিলেন।

হাসিব আল আমিন/আরএআর