সেতুর এক পাশে সড়ক থাকলেও অন্য পাশে সড়ক নেই

সেতু উদ্বোধন করা হয়েছে এক বছর আগে। ব্যয় হয়েছে প্রায় তিন কোটি টাকা। সেতুর এক পাশে সড়ক অন্য পাশে ধানের জমি। তবু খালের ওপর নির্মাণ করা হয়েছে সেতু। এক প্রান্তে কোনো সড়ক না থাকায় সেতুটি কোনো কাজে আসছে না।

সেতুতে ব্যয় হয়েছে প্রায় তিন কোটি টাকা। সেতুর দৈর্ঘ্য ৬৬ মিটার, প্রস্থ সাড়ে ৭ মিটার। কিন্তু সেতুর অপর প্রান্তে কোনো সড়ক নেই। সংযোগ সড়কের পরই জমি। আলপথ ছাড়া সড়কের কোনো অস্তিত্ব নেই সেখানে। এদিকে সেতুটি তুলনামূলক নিচু হওয়ায় ভরা বর্ষায় নৌ চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়

ছাতক উপজেলার ভাতগাঁও ইউনিয়নের আনুজানি গ্রামের পাশের চেলাখালের ওপর এই সেতুর অবস্থান। এলাকার বাসিন্দাদের এক পক্ষ বলছে, এখানে সেতুর কোনো প্রয়োজন ছিল না। এদিকে কোনো সড়ক নেই। অন্য পক্ষের দাবি, সড়ক হলে দুটি গ্রামের মানুষের উপকারে আসবে সেতুটি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ছাতক উপজেলার জালালপুর থেকে আনুজানি হয়ে একটি সড়ক গেছে আলীগঞ্জ বাজারে। আনুজানি গ্রামের পাশেই চেলা খাল। খালের দক্ষিণে আনুজানি গ্রাম, উত্তরে ধানি জমি ও চেরা বিল। বিলের পাড়ে মইনপুর ও কুরশি গ্রাম। চেলা খালের ওপর এই সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয় তিন বছর আগে। গ্রামের পাশের সড়ক যুক্ত করে সেতুটি খালের ওপর নির্মাণ করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি)।

ছাতক উপজেলায় সড়ক ছাড়াই সেতু নির্মাণ

এতে ব্যয় হয়েছে প্রায় তিন কোটি টাকা। সেতুর দৈর্ঘ্য ৬৬ মিটার, প্রস্থ সাড়ে ৭ মিটার। কিন্তু সেতুর অপর প্রান্তে কোনো সড়ক নেই। সংযোগ সড়কের পরই জমি। আলপথ ছাড়া সড়কের কোনো অস্তিত্ব নেই সেখানে। এদিকে সেতুটি তুলনামূলক নিচু হওয়ায় ভরা বর্ষায় নৌ চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়।

আনুজানি গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, মইনপুর ও কুরশি ছাড়াও খালের উত্তর পাড়ের আরও কয়েকটি গ্রামের মানুষের যাতায়াতের সুবিধার জন্য এই সেতু নির্মাণে করা হয়েছে। সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আনুজানি গ্রামের বাসিন্দা বিচারপতি মো. ইমান আলী, এলজিইডি ও সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এই অনুষ্ঠানে সেতুর উত্তর পাড়ের মইনপুর ও কুরশি গ্রামে সংযোগের জন্য সড়ক নির্মাণের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

অনেক স্থানে এ রকম হয়। দেখা গেছে, আগে সেতু হওয়ায় পরে সড়কের কাজ গুরুত্ব দিয়ে দ্রুত করা হয়েছে। সেতুটির উত্তর পাশে সড়ক করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রকল্প প্রস্তাব প্রস্তুত করা হয়েছে

মো. আবুল মনসুর মিয়া, প্রকৌশলী, ছাতক উপজেলা

আনুজানি গ্রামের বাসিন্দা আব্দুর রহিম বলেন, ব্রিজ তো অইয়া গেছে। ওখন রাস্তা অয়র না। রাস্তা নাইতে ব্রিজ কোন কাম লাগব নি।

একই গ্রামের বাসিন্দা মকিবুল ইসলাম বলেন, পাশে একটি গ্রাম আছে। বর্ষাকালে যদি সেই গ্রামে যাওয়া-আসা যায় না, তাহলে ব্রিজের কোনো মূল্য নাই। রাস্তা নির্মাণ করলে ব্রিজটি মানুষের কাজে আসবে। মইনপুর ও কুরশি গ্রামের মানুষও ওই দিকে যাতায়াত করা যাবে। আমাদের দাবি দ্রুত রাস্তা করা হোক।

আরেক বাসিন্দা মো. আমজাদ আলী বলেন, ইলা সুন্দর ব্রিজ আমরার এলাকাত আর নাই। অখন রাস্তা দরকার। রাস্তা অইলেই মানুষ চলাচল করত পারব। রাস্তার মাপজোক নেওয়া অইছে। এখন মানুষ হাওর থাকি ব্রিজের ওপর দিয়া বাড়িত ধান আনে।

ভাতগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য আবদুন নূর বলেন, সেতুর উত্তর পাড় থেকে দুটি গ্রামে যাতায়াতের জন্য সড়ক নির্মাণ করতে হবে। সড়ক না হলে সেতু কোনো কাজে আসবে না।

এ বিষয়ে ছাতক উপজেলা প্রকৌশলী মো. আবুল মনসুর মিয়া ঢাকাপোস্টকে বলেন, অনেক স্থানে এ রকম হয়। দেখা গেছে, আগে সেতু হওয়ায় পরে সড়কের কাজ গুরুত্ব দিয়ে দ্রুত করা হয়েছে। সেতুটির উত্তর পাশে সড়ক করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রকল্প প্রস্তাব প্রস্তুত করছেন তারা।