চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে চার দিন ধরে কলেরা আইভি ফ্লুইড স্যালাইনের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। বাইরের ফার্মেসি থেকে রোগীরা স্যালাইন কিনে এনে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এতে রোগী ও স্বজনদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তবে চার দিন ধরে হাসপাতালে কলেরা স্যালাইনের সংকট থাকলেও জানেন না জেলা সিভিল সার্জন। 

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ড সূত্রে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহে ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে শিশুসহ ১৪৮ রোগী ভর্তি হয়েছেন। গতকাল বুধবার (১৯ অক্টোবর) রাত ১০টা পর্যন্ত নতুন ১৯ জন রোগী আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন। কদিন আগে ডায়রিয়া রোগীর চাপ থাকলেও বর্তমানে কোনো চাপ নেই বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের সেবিকারা। তবে অন্যান্য সব কিছু সাপ্লাই থাকলেও গত চার দিন ধরে কলেরা আইভি ফ্লুইড স্যালাইন সাপ্লাই নেই। রোগীরা বাইরের ফার্মেসি থেকে স্যালাইন কিনে আনছেন। 

ডায়রিয়া ওয়ার্ডের এক রোগীর স্বজন আব্দুল মজিদ বলেন, আমার চাচা তিন দিন হলো ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছেন। প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ টা কলেরা স্যালাইন দিতে হচ্ছে। সাপ্লাই না থাকার কারণে বাইরের ফার্মেসি থেকে কলেরা স্যালাইন কিনতে হচ্ছে। একেক সময় একেক মূল্য নিচ্ছে ফার্মেসি থেকে। হাসপাতালে সাপ্লাই না থাকায় ইচ্ছেমত কলেরা স্যালাইনের মূল্য নিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছে দেড় বছরের শিশু তাসনিম তিশা। শিশুটির মা জানান, গত দুদিন থেকে পাতলা পায়খানা আর বমি হচ্ছিল মেয়ের। গত পরশু সকালে হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি করে। হাসপাতাল থেকে খাওয়ার স্যালাইনসহ যাবতীয় ওষুধ দিলেও কলেরা স্যালাইন সাপ্লাই নেই জানিয়ে বাইরে থেকে কিনে আনতে বলে। দু-এক দিন সাপ্লাই না থাকতে পারে। টানা চার দিন সাপ্লাই নেই এটা দুঃখজনক।

আম্বিয়া খাতুন নামে এক নারী বলেন, তিন দিন আগে তার আড়াই বছরের ছেলের হঠাৎ করেই পাতলা পায়খানা শুরু হয়। স্যালাইন খাওয়ানোর পরও কোনো কাজে আসেনি। অবশেষে হাসপাতালে ভর্তি করিয়েছেন। ডায়রিয়া ওয়ার্ডে রোগীর চাপ না থাকলেও বারান্দায় বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। প্রথম দিন একটা কলেরা স্যালাইন পেলেও আর দেয়নি। বাইরে থেকে কিনতে হয়েছে। 

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আতাউর রহমান বলেন, হাসপাতালে কলেরা স্যালাইন সাপ্লাই নেই। চাহিদা পাঠানো হয়েছে। শিগগিরই কলেরা স্যালাইন চলে আসবে।

চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন ডা. মো. সাজ্জাৎ হাসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, কলেরা স্যালাইনের সাপ্লাইয়ের বিষয়টি হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এবং আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএম) জানবেন। এই তথ্যটা আমাকে জানানো হয়নি। আপনি (প্রতিবেদক) বললেন তাই জানলাম। যেটা জানি না সেই ব্যাপারে আমি কিছু বলতে পারছি না। 

আফজালুল হক/আরএআর