গয়েশ্বর রায়ের অবস্থানরত বাড়িতে পুলিশের অভিযান, আটক ১৩
বিভাগীয় গণসমাবেশ সফল করতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় খুলনায় অবস্থান করছেন। বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) বিকেলে তিনি খুলনায় পৌঁছান। সন্ধ্যায় দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন শেষে রাতে নগরীর বসুপাড়া এলাকার সাবেক এক বিএনপি নেতার বাড়িতে অবস্থান করছিলেন তিনি। সেই বাড়িতে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আসে দলের নেতাকর্মীরা। এসময় অভিযান চালিয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আসা ১৩ নেতাকর্মীকে পুলিশ আটক করেছে বলে অভিযোগ তুলেছে দলের নেতারা।
খুলনা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন জানান, খুলনার গণসমাবেশের সমন্বয় কমিটির প্রধান উপদেষ্টা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় সন্ধ্যায় দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন শেষ করে বাগেরহাট জেলা বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি কাজী খায়রুজ্জামান শিপনের বাসভবনে যান। বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা নেতাকর্মীরা তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ১৩ জনকে আটক করেছে।
বিজ্ঞাপন
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, হাতে লাঠি, কোমরে পিস্তল ঝুলিয়ে কয়েকজন বাড়িতে প্রবেশ করে ত্রাসের সৃষ্টি করেছে। এরা পুলিশ কি না বোঝার উপায় নেই। তারা আমার পাশ থেকে ১৩ জনকে আটক করে নিয়ে গেছে।
জানতে চাইলে নগরীর সোনাডাঙ্গা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক বলেন, বিভিন্ন স্থানে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ধরা হচ্ছে। কোন এলাকা থেকে কাকে ধরা হয়েছে, সেটা সকালে বলতে পারব।
বিজ্ঞাপন
এর আগে সংবাদ সম্মেলনে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় সমাবেশকে ঘিরে দলের নেতাকর্মীদের ধরপাকড় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, কর্মসূচিতে যত বাধা আসবে ততই আন্দোলনে সফলতা আসবে।
শুক্রবার খুলনায় বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ কর্মসূচিকে বাধাগ্রস্ত করতে পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা একযোগে কাজ করছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি তল্লাশি অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে, ভয়ভীতি দেখিয়ে লাভ হবে না।
প্রেস ব্রিফিংয়ের শুরুতে নগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার ও নেতাকর্মীদের বাড়িতে তল্লাশি চালানোর পরিসংখ্যান তুলে ধরেন।
গ্রেপ্তারদের মধ্যে রয়েছেন— সাবেক কাউন্সিলর মাহমুদ আলম বাবু মোড়ল, নগর বিএনপির সদস্য খন্দকার হাসিনুল ইসলাম নিক, বেলাল হোসেন, ২৫নং ওয়ার্ড বিএনপি আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম, যুবদল নেতা কাজী সেলিম, ডালিম, ডা. শাহ আলম, জুলু, গোলাম মোস্তফা ভূট্টো, মিজানুর রহমান বাবু এবং বাগেরহাট থেকে সমাবেশে যোগ দিতে খুলনায় আসা কৃষক দল নেতা মিঠুসহ চার জন।
এছাড়া স্বেচ্ছাসেবক দল জেলা সভাপতি শেখ তৈয়েবুর রহমান, নগর যুবদল সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হুদা চৌধুরী সাগর, যুবদল নেতা আব্দুল আজিজ সুমন, জাবির আলী, স্বেচ্ছাসেবক দলের খায়রুজ্জামান সজীব, কাউন্সিলর হাফিজুর রহমান মনি, বুলবুল মোল্লা, তৌহিদ, ফারুক হোসেন, আলতাফ খান, আবু সাঈদ হাওলাদার আব্বাস, কাজী মিজানসহ অসংখ্য নেতাকর্মীর বাড়িতে পুলিশ অভিযান চালায়। অনেকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয় বলে শফিকুল আলম তুহিন অভিযোগ করেন।
এদিকে খুলনার বাইরে বিভিন্ন জেলা থেকে আসার পথে বাস থামিয়ে যাত্রীদের নামিয়ে মোবাইল নিয়ে ফেসবুক চেক করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিএনপি সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় অনেককে মারধর করে সব কেড়ে নেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ। বিশেষ করে বাগেরহাটের বিভিন্ন স্থানে হামলা-নির্যাতনের খবর পাওয়া গেছে।
মোহাম্মদ মিলন/এসএসএইচ