বাগেরহাটে বিভিন্ন এলাকায় বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা হয়েছে। এতে অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন বলে দাবি দলটির। বিএনপির দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত শরণখোলা উপজেলার রায়েন্দা বাসস্ট্যান্ড, মোরেলগঞ্জ ফেরিঘাট, বাগেরহাট কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ডসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলার ঘটনা ঘটে।

শরণখোলা উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম লাল এ কথা জানান। এছাড়া খুলনাসহ বিভিন্ন স্থানে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের অনেক নেতাকর্মীকে বাস থেকে নামিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া এবং টাকাসহ কাগজপত্র ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।

আহতদের মধ্যে মোরেলগঞ্জ পৌর শ্রমিক দলের সভাপতি মাসুদ খান চুন্নু, শরণখোলা উপজেলা সাউথখালী ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্বাস তালুকদার, বশার ঘরামী, মাসুম মীর, জাকির ফকিরের নাম পাওয়া গেছে। এছাড়া শরণখোলা উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম লাল, প্রবীণ বিএনপি নেতা ফজলুল হকতালুকদার, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শিমুল গাজী, উপজেলা মহিলা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক আসমা আক্তারসহ বেশকিছু দলীয় নেতাকর্মীকে বাস থেকে নামিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা।

আহত সাউথখালী ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক বলেন, আব্বাস তালুকদার ও আমি একসঙ্গে ছিলাম। উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আছাদের নেতৃত্বে আমাদের মারধর করা হয়। কাছে থাকা ১২ হাজার টাকা ও মূল্যবান কাগজপত্র ছিনিয়ে নেয়। আব্বাস তালুকদারের অবস্থা গুরুতর, তাকে খুলনা নেওয়া লাগবে।

শরণখোলা উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম লাল বলেন, সমাবেশ বানচাল করতে শুধু বিএনপির নয়, সাধারণ মানুষেরও যোগাযোগ ব্যাহত করা হচ্ছে। সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের হামলায় আমাদের অন্তত ৫০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। তারপরও আমাদের নেতাকর্মীরা সমাবেশে যাবে।

তিনি আরো বলেন, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। ডাক্তার দেখাতে খুলনা যাচ্ছিলাম, পথে নামিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এজন্যই কি জীবন বাজি রেখে দেশ স্বাধীন করেছিলাম।

বাগেরহাট জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মোজাফফর রহমান আলম বলেন, শরণখোলায় আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে ১০ থেকে ১৫ জন লাঞ্ছিত এবং আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত একজনকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে এবং পাঁচ জনকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া মোরেলগঞ্জ ফেরিঘাট, বাগেরহাট বাসস্ট্যান্ডেও হামলার ঘটনা ঘটেছে।

তিনি আরো বলেন, একদিকে দুই দিন গণপরিবহন বন্ধ রাখছে। অপরদিকে আগে যারা যাচ্ছে তাদের ওপর হামলা হচ্ছে। তাদের আগ্রাসী আচরণই বলে দিচ্ছে বিএনপির পক্ষে সাধারণ মানুষের যে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে তাতে আওয়ামী লীগ ভীত হয়ে পড়েছে। কিন্তু কোনো বাধাতেই আমাদের কর্মীদের দমিয়ে রাখা যাবে না।

শরণখোলা উপজেলার খোন্তাকাটা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাইজুল ইসলাম সরদার বলেন, বিএনপির কোনো নেতাকর্মীর ওপর হামলা হয়নি। এমনিই সমাবেশে যাবে না, তাই আমাদের দোষ দিচ্ছে।

শরণখোলা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, স্বাধীন দেশে সবাই স্বাধীন। আমরা কারো ওপর হামলা করিনি। আর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যেতেও কাউকে বাধা দেওয়া হয়নি।

তানজীম আহমেদ/এসএসএইচ