চলছে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকাজ

রংপুরের বদরগঞ্জে একটি বাড়ির টয়লেটের কূপ খনন করতে গিয়ে বালু ধসে মাটির ২০ ফুট গভীরে এক নির্মাণশ্রমিক আটকা পড়েছেন। আট ঘণ্টা ধরে অভিযান চালালেও এখন (রাত সাড়ে ১১টা) পর্যন্ত তাকে উদ্ধার করতে পারেননি ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। মাটির নিচে গলা পর্যন্ত আটকে থাকা আবু হাসান (২৮) নামের ওই নির্মাণ শ্রমিককে সনাতন পদ্ধতিতে উদ্ধারে আপ্রাণ চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।  

শনিবার (২২ অক্টোবর) বিকেল তিনটার দিকে বদরগঞ্জ পৌর এলাকার বালুয়া ভাটায় সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান সাইদুলের বাড়ির পাশে এ দুর্ঘটনা ঘটে। টানা আট ঘণ্টার অব্যাহত উদ্ধার অভিযানে উন্নত কোনো প্রযুক্তির ব্যবহার করেনি ফায়ার সার্ভিস। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ছাড়াও প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত রয়েছেন।

জানা গেছে, বদরগঞ্জ পৌর এলাকার বালুয়া ভাটা গ্রামের বাবুল দাসের বাড়িতে টয়লেটের কূপ খননে সকাল থেকে কাজ করছিলেন আবু হাসানসহ তিন শ্রমিক। দুপুর আড়াইটার দিকে খনন করা কূপ থেকে উপরে উঠতে গিয়ে বালু ধসে আটকা পড়েন আবু হাসান। 

প্রথমে এ ঘটনায় কেউ গুরুত্ব না দেওয়ায় অন্য দুই শ্রমিক চলে যান। এদিকে বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে মাটির নিচে গলা পর্যন্ত আটকে গিয়ে মৃত্যুর মুখে পড়েন ওই শ্রমিক। ঘটনা জানাজানি হলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযান শুরু করেন।

সনাতন পদ্ধতিতে অভিযান পরিচালনা করায় উদ্ধার কার্যক্রম দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। তবে জীবিত অবস্থায় ওই শ্রমিককে উদ্ধারে কূপের নিচে অক্সিজেন সরবরাহ করা হচ্ছে। নির্মাণশ্রমিক আবু হাসান পৌর এলাকার শাহাপুর মাস্টারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
 
কূপে আটকা পড়ে থাকা শ্রমিককে নিরাপদে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করতে রংপুর ও বদরগঞ্জ থেকে আসা ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট কাজ করছে। অভিযান দেখতে ঘটনাস্থলে অন্তত ছয় থেকে সাত হাজার উৎসুক মানুষ ভিড় করছেন। তাদের সবাই ওই নির্মাণশ্রমিকের জন্য সেখানে বিশেষ প্রার্থনায় সামিল হয়েছেন ।

বর্তমানে ঘটনাস্থলে রয়েছেন রংপুর পৌরসভার মেয়র আহসানুল হক চৌধুরী টুটুল, উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলে রাব্বি সুইট, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের রংপুর বিভাগীয় উপপরিচালক জসিম উদ্দিন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) কাশপিয়া তাসরিন, রংপুর ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার বাদশা মাসউদ আলম, বদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান হাবিবসহ উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।  

বদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) কাশপিয়া তাসরিন জানান, কূপে আটকে থাকা শ্রমিককে উদ্ধারে সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে। উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের রংপুর ও বদরগঞ্জের তিনটি ইউনিট উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করছে। আমরা সেখানে অক্সিজেনের ব্যবস্থা করেছি। পাশাপাশি অ্যাম্বুলেন্সসহ অন্যান্য ব্যবস্থা রয়েছে। 

বালু ধসে মাটির নিচে আটকে পড়া ওই নির্মাণ শ্রমিককে জীবিত অবস্থায় উদ্ধারে সব ধরনের চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। 

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরএইচ