শিশু ইয়াসিনের শরীরে মারধরের চিহ্ন ফুটে উঠেছে

লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে নিজ বাড়িতে মায়ের সামনে ইয়াছিন আরাফাত (৮) নামে এক শিশুকে (ডিস লাইনের তার) মারধরের অভিযোগ উঠেছে মাদ্রাসাশিক্ষকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার পর থেকে ওই শিক্ষক পলাতক রয়েছেন। বুধবার (৩ মার্চ) রাতে ইয়াছিনের মা লাভলী বেগম থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।

অভিযুক্ত শিক্ষক ফারুকের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলায় বলে জানা গেছে। তবে মাদ্রাসার কেউই তার বিস্তারিত পরিচয় দিতে পারেননি।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ইয়াসিন রায়পুরের পূর্বলাচ নতুন বাজার এলাকার প্রবাসী কাজী আলী হায়দারের ছেলে। সে তাহজীবুল উন্মাহ ইসলামিক ইনস্টিটিউটে (মাদ্রাসায়) দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে। রহস্যজনক কারণে শিক্ষক ফারুক বাড়ি থেকে জোরপূর্বক ইয়াসিনকে মাদ্রাসায় নিতে আসে। কিন্তু সে যেতে চায়নি। 

এতেই হাতে থাকা চাবুক দিয়ে মা লাভলী বেগমের সামনেই মারতে মারতে ইয়াসিনকে টেনে ওই শিক্ষক মাদ্রাসায় নিয়ে যায়। এতেও ক্ষান্ত হননি তিনি। মাদ্রাসায় নিয়েও ইয়াসিনকে মারধর করেন তিনি। মুমূর্ষু অবস্থায় ইয়াসিনকে উদ্ধার করে মা তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এখন সে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

ইয়াসিনের মা লাভলী বেগম অভিযোগ করে বলেন, আমার সামনে ইয়াসিনকে মারতে মারতে নিয়ে গেছে পাষণ্ড শিক্ষক। আমার তখন বুকটা ফেটে যাচ্ছিল। আমি ওই শিক্ষকের উপযুক্ত বিচার চাই।

মুঠোফোনে ইয়াসিনের বাবা প্রবাসী কাজী আলী হায়দার বলেন, পাষণ্ডের মতো ওই শিক্ষক আমার ছেলেকে মেরেছে। আমার ছেলের দোষ ছিল সে মাদ্রাসায় যেত না। ছেলেটির পুরো শরীরে আঘাতের চিহ্ন ফুটে আছে। ছেলের গায়ের আঘাতের চিহ্ন দেখে বুকটা ফেটে যাচ্ছে।

মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুল বাতেন বলেন, শিশুটিকে দেখার পর আমি নিজেই বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছি। প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটিসহ সকলের সঙ্গে কথা বলে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে ওই শিক্ষক কোথায় আছে জানাতে পারেননি তিনি।

অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা অসীম চন্দ্র ধর বলেন, অভিযোগ পেয়ে মাদ্রাসায় অভিযান চালানো হয়েছে। অভিযুক্ত ফারুক ও অধ্যক্ষ আব্দুল বাতেন পালিয়ে যাওয়ায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটির কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেছি। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় অভিযুক্ত শিক্ষককে থানায় হাজির করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

হাসান মাহমুদ শাকিল/এসপি