সামিয়া মাহাবুব

সকালে ঘুম থেকে উঠে পড়তে বসেন সামিয়া মাহাবুব (১৯)। পরীক্ষার প্রস্তুতি প্রায় শেষ। রেডি হয়ে সহপাঠীদের সঙ্গে কেন্দ্রে যাবেন। এর মধ্যেই সকাল সাড়ে ৮টায় খবর আসে তার বাবা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। খবর শুনেই অজ্ঞান হয়ে পড়েন। এমতাবস্থায় বাবার মরদেহ বাড়িতে রেখেই ফুফুর সঙ্গে চলে যান এইচএসসি পরীক্ষাকেন্দ্রে।

মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) বেলা ১১টায় শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার ইদুলপুর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের এইচএসসি পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষা দেন সামিয়া।

সামিয়া উপজেলার কোদালপুর ইউনিয়নের দাইমি কোদালপুর এলাকার মাহাবুব সরদারের মেয়ে। তিনি এবার সরকারি সামসুর রহমান কলেজের মানবিক বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছেন। তারা ছয় বোন।

বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, মাহাবুব সরদারের মৃত্যুর খবর পেয়ে স্বজন-প্রতিবেশীসহ অনেকেই উপস্থিত হয়েছেন।

সামিয়া বলেন, কয়েকদিন ধরে বাবা জ্বরে ভুগছিলেন। আজ সকালে দোকানে গিয়েছিলেন চা খেতে। দোকান থেকে এসেই সামিয়া বলে ডাক দিয়ে মাটিতে পড়ে যান। আমি পাখা দিয়ে তাকে বাতাস করি। পরে বাবাকে ধরাধরি করে গোসাইরহাট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আমি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিই। বাবাকে হাসপাতালে দেখে তারপর পরীক্ষাকেন্দ্রে যাব এমনটা ভেবেই বের হচ্ছিলাম। তখনই খবর আসে আমার বাবা আর নেই। বাবাকে সবাই বাড়িতে নিয়ে এলে তাকে বাড়িতে রেখে আমি পরীক্ষার হলে যাই।

হল সুপার মো. দৌলদ আহমেদ চৌধুরী ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঘটনাটি শোনার পর আমরা তাকে পরীক্ষা হলে সার্বিক সহযোগিতা করি। তাকে সান্ত্বনা দিই যাতে সে ঠিকমতো পরীক্ষা দিতে পারে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাফি বিন কবির ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা তাকে উৎসাহিত করি যাতে করে পরীক্ষা দেওয়ার সময় সে একেবারে ভেঙে না পড়ে।

সৈয়দ মেহেদী হাসান/এমজেইউ