দীর্ঘ ১২ বছর পর শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন। এ উদ্দেশ্যে উপজেলার এএইচসি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে সাজানো হয়েছে নৌকার আদলে বিশাল আকৃতির ৮০ ফুট লম্বা মঞ্চ। দিনটি স্মরণীয় করে রাখতে নানা প্রস্তুতি নিয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগ।

আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক নৌকা সদৃশ মঞ্চ থেকেই পুরো অনুষ্ঠান পরিচালনা করা হবে। আয়োজকরা বলছেন, এবারের সম্মেলন উৎসবমুখর ও জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন করা হবে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। আটটি ইউনিয়ন নানা পোস্টার ও ব্যানারে ছেয়ে গেছে। সম্মেলনে কাউন্সিলর ও ডেলিগেটসহ ১০ হাজার নেতাকর্মী ও সমর্থকের আগমন ঘটবে বলে মনে করছেন সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি।

জানা গেছে, সব বিভেদ ভুলে দূরদর্শী নেতৃত্ব ও ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালী-৫ (কোম্পানীগঞ্জ-কবিরহাট) আসনে বিজয়ী করাই উপজেলা আওয়ামী লীগের মূল পরিকল্পনা। এক্ষেত্রে সভাপতি পদে আলোচনায় আছেন ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই ও বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। আর সাধারণ সম্পাদক পদে আলোচিত হচ্ছে কোম্পানীগঞ্জের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের নাম।

সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত থাকবেন কোম্পানীগঞ্জের কৃতি সন্তান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বিশেষ অতিথি হিসেবে সম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন, কৃষি ও সমবায়বিষয়ক সম্পাদক বেগম ফরিদুন্নাহার লাইলী, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী।

সম্মেলন উদ্বোধন করবেন নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক অধ্যক্ষ এএইচএম খায়রুল আনম চৌধুরী সেলিম। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করবেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খান। এছাড়া জেলা-উপজেলার নেতারা অংশ নেবেন।

নোয়াখালী জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি তাশিক মির্জা কাদের ঢাকা পোস্টকে বলেন, নৌকার আদলে মঞ্চ সাজানো হয়েছে। পুরো উপজেলা সাজ সাজ রব। নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে। ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগের জন্য এমন সম্মেলন গুরুত্বপূর্ণ।

আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন সম্পর্কে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, স্বরণকালের সেরা সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। সম্মেলন সুষ্ঠু ও সুন্দর করতে আমাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। দলীয় বিভাজন, বিরোধ, হানাহানি, সব বিভেদ ভুলে দলকে গুছিয়ে নেওয়ার অঙ্গীকার করা হয়েছে।

খিজির হায়াত খান আরও বলেন, তৃণমূল নেতাকর্মীদের প্রত্যাশা সভাপতি পদে বসুরহাট পৌর মেয়র আবদুল কাদের মির্জা এবং সাধারণ সম্পাদক পদে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলকে বেছে নেওয়া হোক।

সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই ও বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা ঢাকা পোস্টকে বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের যে সিদ্ধান্ত দেবেন তা মেনে নেব। আমরা চাই আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জয় হোক। তাহলেই আমাদের অভিভাবক ওবায়দুল কাদের ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জয় হবে।

প্রসঙ্গত, ২০১০ সালে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেসময় বীর মুক্তিযোদ্ধা খিজির হায়াত খানকে সভাপতি ও নুর নবী চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছিল।

হাসিব আল আমিন/এমজেইউ