বরিশাল সিটি করপোরেশন ও এর আশপাশের এলাকায় ডাকাত আতঙ্কে মাইকিং করা হচ্ছে। এসব এলাকার মসজিদের মাইক ব্যবহার করে এবং দলে দলে বিভক্ত হয়ে এলাকাকাবাসী সবাইকে সতর্ক করছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। এতে করে পুরো নগরী জুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে।

জেলা প্রশাসন বলছে, পুলিশের টহল জোরদার থাকলেও আতঙ্ক সৃষ্টি করতে পরিকল্পিতভাবে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। বরিশালের কোথাও ডাকাতির কোনো ঘটনা ঘটেনি। স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে।

মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত আড়াইটার দিতে এমন মাইকিং করা হয়।

নগরীর ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মশিউর রহমান জানিয়েছেন, রাত দুইটার পরপরই এলাকার মসজিদের মাইক দিয়ে ডাকাত ঢুকেছে, সবাই সতর্ক হোন মর্মে ঘোষণা করা হয়। শুধু এই ওয়ার্ডে না পাশাপাশি ২৩, ২৫, ১১, ১৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকেই বিভিন্নজন এমন তথ্য দিয়েছেন। এছাড়া ভুভুজেলা নিয়ে এলাকার কিছু মানুষ হৈচৈ করে, বাঁশি বাজিয়ে রাস্তায় রাস্তায় সতর্ক করছে। এতে আমার ঘরের শিশু, বৃদ্ধ সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছি।

কাউনিয়া এলাকার বাসিন্দা শাহেদ জানান, কাউনিয়া ও আশপাশের কমপক্ষে ৬/৭টি ওয়ার্ডে একই সময়ে মাইকিং করা হয়। সঙ্গে সঙ্গে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে জানলাম শুধু কাউনিয়া নয় বরিশাল সিটি করপোরেশনের ৩০টি ওয়ার্ডে এভাবে মাইকিং করা হচ্ছে।

সিটি করপোরেশন সংলগ্ন উপজেলা বাবুগঞ্জের বাসিন্দা আল আমিন জানান, রাত ২টার দিকে বাবুগঞ্জের বিভিন্ন মসজিদে মাইকিং করা হচ্ছে ডাকাত এসেছে মর্মে। উপজেলার সবাই আতঙ্কিত হয়ে রাস্তায় বেরিয়ে এসেছে।  

খোঁজ নিয়ে উজিরপুর, বানারীপাড়ার কিছু অংশ ও বরিশাল সদর উপজেলারও কিছু অংশে এমন মাইকিং করা হয়েছে বলে জানা পাওয়া গেছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও অনেকে প্রচার চালিয়েছেন।

যদিও মাইকিং শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে বাড়তি তল্লাশি চৌকি বসায় পুলিশ। এছাড়া বিভিন্ন এলাকায়ও টহল জোরদার করা হয়েছে বলে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তবে একযোগে পুরো নগরীতে মাইকিংয়ের বিষয়টি নিয়ে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেননি ওই কর্মকর্তারা।

বরিশালের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সোহেল মারুফ মেট্রোপলিটন পুলিশের বরাত দিয়ে জানিয়েছেন, মোড়ে মোড়ে পুলিশ টহল দিচ্ছে। কোথাও ডাকাতি হয়েছে পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের কাছে এমন স্পষ্ট তথ্য নেই। তবে এলাকায় এলাকায় মাইকিং হচ্ছে এটি সত্য। 

তিনি বলেন, আমার ধারণা মাইকিংয়ের বিষয়টি পরিকল্পিত। এটি একটি গুজব। গুজবে আতঙ্কিত না হওয়ার জন্য জেলা প্রশাসন থেকে আশ্বস্ত করা হচ্ছে।

মেহেদী/এসএম