হাসপাতালে আহত জলি বেগম

আন্তর্জাতিক নারী দিবসে পাঁচ হাজার টাকা বাপের বাড়ি থেকে এনে না দেওয়ার অপরাধে জলি বেগম (২৫) নামের এক নারীকে পিটিয়ে হাসপাতালে পাঠিয়েছেন তার স্বামী। আহত অবস্থায় তাকে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (৮ মার্চ) বিকেলে সদর উপজেলার বহুলা গ্রামে এ ঘটনাটি ঘটেছে।

হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় আহত নারী জলি বেগম ঢাকা পোস্টকে জানান, প্রায় আট বছর আগে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বহুলা গ্রামের কদর আলীর সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর পাঁচ ও তিন বছরের দুটি কন্যাসন্তান রয়েছে। দুটি কন্যাসন্তান রেখে তার স্বামী কদর আলী গত বছর আরেকটি বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকেই প্রথম স্ত্রী জলিকে বিভিন্ন অজুহাতে মারধর করে আসছেন।

সোমবার বিকেলে তার বাপের বাড়ি থেকে পাঁচ হাজার টাকা এনে দেওয়ার জন্য তাকে তার স্বামী কদর আলী চাপ প্রয়োগ করেন। কিন্তু জলির বাবা গরিব হওয়ায় তিনি টাকা দিতে অস্বীকার করেন। এতে কদর আলী ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে পিটিয়ে আহত করেন। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করান।

কদর আলী দ্বিতীয় বিয়ে করার পর থেকেই তার ও সন্তানদের ভরণপোষণ থেকে বিরত রয়েছেন জানিয়ে জলি জানান, মানুষের বাড়িতে কাজ করে তার সন্তানদের দেখাশোনা করছেন তিনি। ইতিপূর্বে তার স্বামীকে একাধিকার টাকা এনে দিয়েছেন বলেও তিনি জানিয়েছেন।

হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে নিয়ে আসা পার্শ্ববর্তী বাড়ির বাসিন্দা ফুলেছা বেগম জানান, কদর আলী দ্বিতীয় বিয়ে করার পর থেকে তার ওপর নির্যাতন চলে আসছে। আজও তাকে পিটিয়ে আহত করেছেন টাকার জন্য। ফুলেছা আরও বলেন, তার বাড়ি জেলার বানিয়াচং উপজেলার বড়ইউড়ি হওয়ার কারণে আমি মানবিক দিক বিবেচনা করে তাকে চিকিৎসার জন্য সদর হাসপাতালে নিয়ে এসেছি।

হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মইনুল ইসলাম  ঢাকা পোস্টকে জানান, আহত জলির শরীরে ফোলা-জখম হয়েছে। তবে ভর্তির মতো বড় ধরনের কোনো আঘাত না থাকায় তাকে চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাসুক আলী ঢাকা পোস্টকে জানান, থানায় কেউ কোনো অভিযোগ করেননি। এ ব্যাপারে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মোহাম্মদ নূর উদ্দিন/এনএ