কুড়িগ্রামের চর রাজীবপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নের ১ ও ২নং ওয়ার্ডের কয়েকটি গ্রামে গত দুই রাত ধরে ভারতীয় হাতির তাণ্ডব চলছে। হাতির তাণ্ডবে স্থানীয় কৃষকদের কয়েক বিঘা জমির ভূট্টা ও সরিষা ক্ষেতসহ পানি সেচের শ্যালো ইঞ্জিন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও সর্বশেষ রোববার (৮ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে হাতির পাল স্থানীয় এক বাসিন্দার বসতবাড়ির ক্ষতি সাধন করেছে। হাতির তাণ্ডবে কয়েকটি গ্রামের কৃষক ও বাসিন্দারা এখন আতঙ্কে দিনযাপন করছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার সদর ইউনিয়নের মিয়া পাড়া, পূর্ব জালছিড়া পাড়া ও বালিয়ামারী সীমান্তে গত দুই রাত ধরে বুনো হাতি তাণ্ডব চালিয়ে আবারও ভারতীয় সীমান্তে ফিরে যাচ্ছে।

ভুক্তভোগী এলাকাবাসী জানায়, গত শনিবার ও রোববার (৭ ও ৮ জানুয়ারি) গভীর রাতে রাজীবপুর ও রৌমারী উপজেলার সীমান্ত এলাকার আর্ন্তজাতিক মেইন পিলার ১০৭২ এর কাছ দিয়ে বন্য হাতির পাল ব্যাপক এলাকা জুড়ে বাংলাদেশ সীমান্তের কৃষকদের জমির আবাদ তছনছ করে গেছে।

পূর্ব জালচিড়া পাড়া গ্রামের কৃষক শফিউর রহমান শফি জানান, গত রোববার রাত ৩টার দিকে আন্তর্জাতিক পিলার ১০৭২ এর দক্ষিণ দিকে বর্ডার হাটের পাশ দিয়ে ৩০/৩৫ টি হাতি ভারতের কালাইয়ের চর সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বালিয়ামারী ব্যাপারী পাড়া গ্রামের সামনে দিয়ে ঢুকে মিয়া পাড়া ও জালচিড়া পাড়া সীমান্তের প্রায় ৫ একর জমির ভুট্টা, সরিষা ও গমের জমি লন্ডভন্ড করে। সঙ্গে ৩টি শ্যালো মেশিন দুমড়ে মুচড়ে দিয়ে যায়।

বালিয়ামারী গ্রামের কৃষক আব্দুল আজিজ দেওয়ানী জানান, হাতির পাল তার সরিষার জমি এবং শ্যালো মেশিনসহ অন্তত ৫টি শ্যালো মেশিন ভাঙচুর করেছে। তার জমির আশেপাশের প্রায় ৫ বিঘা জমির ভুট্টা, সারিষা, ধানের বীজতলা, সবজি বাগান ও গমের ক্ষেত পদদলিত করে ক্ষতি সাধন করেছে।

ক্ষতিগ্রস্ত আরও কৃষকরা জানান, প্রতি বছর বন্যহাতি তাদের ব্যাপক ক্ষতি করলেও সরকারি উদ্যোগে তাদের ফসল রক্ষা কিংবা প্রয়োজনীয় ক্ষতিপূরণের কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় না। হাতির তাণ্ডব থেকে ফসল ও বসতবাড়ি রক্ষায় সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কার্যকর পদক্ষেপ দাবি করেন তারা।

রাজীবপুর সদর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নুর ইসলাম বলেন, ‘গত দুই দিন ধরে রাতের বেলা ভারতীয় সীমান্ত থেকে হাতির পাল বাংলাদেশ সীমান্তে এসে ফসল ও ঘরবাড়ির ক্ষয়ক্ষতি করছে। হাতির ভয়ে মানুষ আতঙ্কে আছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

রাজীবপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিরন ইলিয়াস বলেন, ভারতীয় হাতির পাল বাংলাদেশের কৃষকদের অনেক ফসলের ক্ষতি করেছে। সেচ যন্ত্রও ভেঙে ফেলেছে। আমি বালিয়ামারী বিজিবি কোম্পানি কমান্ডারকে বিষয়টি জানিয়েছি। এছাড়াও উপজেলা প্রশাসনকে এ বিষয়টি জানানো হয়েছে।

জুয়েল রানা/আরকে