১৬ দিন ধরে হাসপাতালের মেঝেতে শুয়ে থাকা লোকটি কে?
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জোনারেল হাসপাতালের মেঝেতে শুয়ে আছেন ষাটোর্ধ্ব এক বৃদ্ধ
টানা ১৬ দিন ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জোনারেল হাসপাতালের মেঝেতে শুয়ে আছেন ষাটোর্ধ্ব এক বৃদ্ধ। কথা বলতে না পারায় নাম-ঠিকানাও জানা যাচ্ছে না তার। অজ্ঞাত ওই বৃদ্ধ উচ্চ রক্তচাপসহ বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার স্থানীয় এক সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবক খোঁজখবর রাখছেন ওই বৃদ্ধের। তবে বৃদ্ধের সেবার জন্য তার পাশে স্বজনদের প্রয়োজন বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
বিজ্ঞাপন
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২৪ ফেব্রুয়ারি দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে ১নং প্ল্যাটফর্মে ভ্যানগাড়ি থেকে পড়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন ওই বৃদ্ধ। পরে প্ল্যাটফর্মে থাকা লোকজন মাথায় পানি ঢেলে জ্ঞান ফেরান তার। কিছুক্ষণ পর আবারও অচেতন হয়ে পড়েন। তখন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কওমি ব্লাড ব্যাংক সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবক শাকিল আহমেদ রেলওয়ে স্টেশন কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় বৃদ্ধকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
পরবর্তীতে চিকিৎসকদের পরামর্শে বৃদ্ধকে হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। ভর্তির ১০ দিন পর চোখ খোলেন বৃদ্ধ। কিন্তু তিনি কথা বলতে পারছেন না। স্ট্রোক করেছেন কিনা কিংবা মাথায় আঘাত পেয়েছেন কিনা- সেটি জানার জন্য সিটি স্ক্যান করতে বলেছেন চিকিৎসক। কিন্তু টাকার অভাবে সিটি স্ক্যান করা যাচ্ছে না।
বিজ্ঞাপন
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, মেঝেতে শুয়ে আছেন ওই বৃদ্ধ। দিনের বেশিরভাগ সময় ঘুমিয়ে কাটে তার। চোখ মেলতে পারলেও কথা বলতে পারছেন না। ফলে তার পরিচয় ও স্বজনদের সম্পর্কে কোনো তথ্য জানা যাচ্ছে না।
কওমি ব্লাড ব্যাংকের স্বেচ্ছাসেবক শাকিল আহমেদ বলেন, আমার এক বন্ধুকে আনতে সেদিন স্টেশনে গিয়েছিলাম। হঠাৎ দেখি প্ল্যাটফর্মে লোকজনের জটলা। কাছে যাওয়ার পর দেখি বৃদ্ধ মাটিতে পড়ে আছেন। এরপর আমি বৃদ্ধকে স্টেশন কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় হাসপাতালে নিয়ে আসি। এখনও পর্যন্ত বৃদ্ধের স্বজনদের খোঁজ পাইনি। তাই আমি হাসপাতালে গিয়ে বৃদ্ধের দেখাশোনা করছি। হাসপাতালে যে পরীক্ষাগুলো করা যায়, সেগুলো কর্তৃপক্ষকে বলে বিনামূল্যে করিয়েছি। এখন সিটি স্ক্যান বাকি, মানুষের কাছ থেকে সহযোগিতা নিয়ে সিটি স্ক্যান করানোর চেষ্টা করছি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. শওকত হোসেন বলেন, আগের চেয়ে ওই বৃদ্ধের শারীরিক অবস্থা এখন কিছুটা ভালো। হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা পেলেও ওই বৃদ্ধের পাশে স্বজনদের প্রয়োজন।
আজিজুল সঞ্চয়/এএম