আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ২৯ জানুয়ারি রাজশাহীতে আসছেন। এদিন তিনি রাজশাহীর মাদরাসা মাঠে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়েজিত জনসভায় ভাষণ দেবেন। প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে রাজশাহীজুড়ে সাজ সাজ রব বিরাজ করছে। সাজসজ্জার অংশ হিসেবে বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নের চিত্র ব্যানার, ফেস্টুনে উল্লেখ করে গুরুত্বপূর্ণ সড়কের পাশে টাঙানো হচ্ছে।

সর্বশেষ ২০১৮ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি রাজশাহীতে জনসভায় এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দীর্ঘ পাঁচ বছর পর রাজশাহী আসছেন তিনি। রাজশাহীতে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন শেষে মাদরাসা মাঠে জনসভায় যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। 

এদিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমনকে কেন্দ্র করে রাজশাহী জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর জনসভা সফল করতে শুধু নগর বা জেলা নয়, পুরো রাজশাহী বিভাগজুড়ে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে দলটির পক্ষ থেকে। তার অংশ হিসেবে বর্তমান সরকারের উন্নয়ন তুলে ধরে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কের পাশে  ব্যানার-ফেস্টুন টাঙানো হচ্ছে। নগরজুড়ে সাজ সাজ রব বিরাজ করছে। 

রাজশাহী নগরীর কাটাখালী, তালাইমারী, ভদ্রা, শিরোইল রেলগেট, গোরহাঙ্গা শহীদ কামারুজ্জামান চত্বর, সাহেব বাজার জিরোপয়েন্ট, কুমারপাড়া আওয়ামী লীগের কার্যালয়, সিঅ্যান্ডবি, কোর্ট, নওহাটা বিমানবন্দর সড়কের বিভিন্ন জায়গায় ব্যানার, ফেস্টুন ও সড়কের ওপরে গেট (তোরণ) তৈরি করা হয়েছে। তাতে বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রমের চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার আগমনকে ঘিরে বর্ণিল রূপে সাজতে শুরু করেছে নগর। রঙ-বেরঙের ব্যানার-ফেস্টুন লাগানো হচ্ছে। শতাধিক তোরণ নির্মাণে কাজ শুরু হয়েছে নগরজুড়ে। স্থানীয় নেতারা আগমনী শুভেচ্ছা বার্তায় প্রচারণা চালাচ্ছেন। আগামী ২৯ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর রাজশাহীতে আগমন উপলক্ষে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে। এরই মধ্যে সমাবেশস্থলে পুলিশি নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

জানা গেছে, রাজশাহী সফরে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন, সারদা পুলিশ একাডেমি পরিদর্শন শেষে বিকেলে প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগের জনসভায় যোগ দেবেন। প্রধানমন্ত্রীর আগমন ও নিরাপত্তায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা দফায় দফায় বৈঠক করেছে। রাজশাহীজুড়ে নিরাপত্তায় জেলা পুলিশ, মেট্রোপলিটন পুলিশ, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন, র‌্যাবসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা মাঠ পর্যায়ে কার্যক্রম শুরু করেছে। বর্তমান সরকারের মেয়াদের শেষ সময়ে এসে দলীয় প্রধানের সফরকে কেন্দ্র করে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা।

বেশ আগে থেকেই তারা বিভাগের আট জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রস্তুতিমূলক সভা করেছেন। গত ১৩ জানুয়ারি এক দল এমপি-মন্ত্রীর অংশগ্রহণে বিভাগীয় প্রতিনিধি সভাও সেরেছে আওয়ামী লীগ। যেখানে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের চিত্র তুলে ধরে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণার নির্দেশনা দিয়েছেন নেতৃবৃন্দ।

রাজশাহী মহানগর যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তৌরিদ আল মাসুদ রনি জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমনকে কেন্দ্রে করে নগর যুবলীগের পক্ষ থেকে সভা ও প্রচার মিছিল করা হয়েছে। এছাড়া নগরীতে বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের চিত্র তুলে ধরে ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টার লাগানো হচ্ছে। ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ে স্থানীয় নেতাদের প্রচারণা চালাতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোহাম্মদ আলী কামাল জানান, দলীয় সভাপতির আগমন উপলক্ষে প্রস্তুতি হিসেবে তারা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। ঐতিহাসিক মাদরাসা মাঠে বিশাল জনসভা অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে ৭ লক্ষাধিক মানুষের অংশগ্রহণের টার্গেট রেখে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে ব্যানার, ফেস্টুন লাগানো শুরু হয়েছে। শেখ হাসিনার আগমনকে কেন্দ্র করে নেতা-কর্মীদের মাঝে উচ্ছ্বাস-উদ্দীপনা বিরাজ করছে। তারা প্রধানমন্ত্রীকে রাজশাহীতে বরণ করতে অধীর অপেক্ষায় আছেন।

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার আনিসুর রহমান জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমনকে সামনে রেখে এরই মধ্যে প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। ঢাকা হেড কোয়ার্টারের পরিকল্পনা অনুযায়ী আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছে। যে কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে আগে থেকে সোচ্চার রয়েছে পুলিশ।

আরএআর