বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে নিঃস্ব হয়ে গেছে। বর্তমানে আওয়ামী লীগের যে অবস্থা তাদের একমাত্র ভরসা রাষ্ট্রযন্ত্র। এই রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে তারা জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করছে। আওয়ামী লীগ এখন আর কোনো রাজনৈতিক দল নয়, এখন একটি ফ্যাসিস্ট গোষ্ঠীতে পরিণত হয়েছে।

শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ময়মনসিংহ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট মাঠে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিদ্যুৎ, গ্যাস ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য কমানো এবং বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ গ্রেপ্তার নেতাকর্মীদের মুক্তি, সরকারের পদত্যাগ, অবৈধ সংসদ বাতিল, নির্দলীয়, নিরপেক্ষ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে এ বিভাগীয় সমাবেশের আয়োজন করে দলটি।

ভোট চুরি করার জন্য আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের জনগণের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, বাংলাদেশে যত অপকর্ম, যত গায়েবি মামলা, গ্রেপ্তার গুম-খুন হচ্ছে তা শুধুমাত্র ভোট চুরি করার জন্য। অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকার জন্যই জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে জনগণকে বাইরে রেখে সরকারি কর্মকর্তাদের ব্যবহার করে ক্ষমতা দখল করার কারণেই বাংলাদেশ আজ পিছিয়ে গেছে।

তিনি আরও বলেন, তারা শুধু ভোট চুরিই করছে না। তারা ব্যাংক, শেয়ারবাজার, বড় বড় মেগা প্রকল্প চুরি করছে। তারা বাংলাদেশকে একটি ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। তারা বাংলাদেশকে রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিকভাবে নিঃস্ব করেছে। সেজন্য বাংলাদেশের মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাপন কঠিন হয়ে পড়েছে। নিম্ন আয়ের মানুষ দুবেলা খেতে পারছে না। সংস্কৃতি ও শিক্ষার ক্ষেত্রেও আমাদের ধ্বংস করে দিয়েছে। এই দুর্দশা থেকে বের হয়ে আসতে হলে আমাদের আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারের পতন ঘটাতে হবে।

জনগণ তাদের মালিকানা ফিরে পাওয়ার আন্দোলনে রাস্তায় নেমেছে উল্লেখ করে স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, লক্ষ-কোটি জনতা রাস্তায় নেমেছে। তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে রাষ্ট্রের কোনো শক্তি টিকে থাকতে পারবে না। বাংলাদেশের মানুষের কাছে বিদায় নিতে হবে। মামলা, গ্রেপ্তার, গুম, খুন আমাদেরকে থামাতে পারেনি। আমরা প্রাণ দিতে শিখেছি, রক্ত দিতে শিখেছি। আমাদের কেউ থামাতে পারবে না।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্দেশে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বিএনপির সমাবেশের দিন আওয়ামী লীগ পাল্টা কর্মসূচি দিয়েছে। তারা নাকি রাস্তায় জনগণের জানমাল পাহারা দিচ্ছে। রাস্তায় আওয়ামী লীগের লোকজনের যদি বাংলাদেশের জনগনের সম্পদ পাহারা দিতে হয় তাহলে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাজ কী? আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে একটি কথা বলতে চাই, এই আওয়ামী লীগ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব নিচ্ছে, রাষ্ট্রের জনগণের সম্পদের দায়িত্ব নিচ্ছে। কিছুদিন পরে তারা থানা দখল করবে। এরা আপনাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আর কোনো কাজ তারা করতে দেবে না।

উবায়দুল হক/এমজেইউ