রংপুরের মিঠাপুকুরের ইমাদপুর ইউনিয়নে খাল পুনঃখনন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে ফরিদপুর পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি লিমিটেড। ওই প্রকল্পে কাজে ব্যাপক অনিয়ম, অর্থ লুটপাট, স্বজনপ্রীতি ও কৃষিজমি ক্ষতি সাধনের অভিযোগ তুলেছেন সমিতির সাধারণ সদস্যরা।

এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, ২০২১-২২ অর্থবছরের ইমাদপুর ইউনিয়নে ৯ কিলোমিটার খাল পুনঃখনন করা হচ্ছে। জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) অর্থায়নে প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা।

সমিতির ২২৬ জন সদস্যের মধ্যে প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, ভেকু দিয়ে খাল খনন করতে ২১ লাখ টাকা খরচ হয়েছে, বাকি টাকা স্থানীয় ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা লুটপাট করেছেন। টাকা উত্তোলন করেছেন ৬৮ লাখ। এছাড়া স্বজনপ্রীতি করে ১২টি এলসিএস গ্রুপের মাধ্যমে কাজটি হলেও বেশিরভাগ গ্রুপের সভাপতি ও সম্পাদক একে অপরের আত্মীয়।

খাল পাড়ের লোকজনের অভিযোগ, এই খাল খননে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। খালের তলদেশ খনন না করে শুধু পাড়ের মাটি কেটে প্রস্থ বাড়ানো হয়েছে। সেই মাটি আবার খালের পাড়ে ফেলায় কাজ শেষ হওয়ার আগেই ভেঙ্গে পড়েছে বেশ কিছু জায়গায়। বর্ষা মৌসুমে খালের পাড়ে রাখা মাটি ধসে আবার খালে পড়বে। তখন খাল আরও ভরাট হবে, কৃষি জমিতে আরও জলাবদ্ধতা বাড়বে।

ইমাদপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য ইব্রাহীম মন্ডল বলেন, ইউনিয়নের কানামাল্লি গহতে পদ্মপুকুর সুইচগেট পর্যন্ত কাজে লুটপাট করে এখন আমার এলাকায় ভেকু নিয়ে এসেছে। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভ রয়েছে। সব এলাকা থেকে সমিতিতে সদস্য নিলেও আমার এলাকার কাউকে নেওয়া হয়নি। ধানের চারা বড় হয়েছে, এই সময় রোপণ করা ধান নষ্ট করে খাল খনন করার কোনো মানে হয় না।

ইমাদপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম ডানো বলেন, স্বার্থান্বেষী কয়েকজন মিলে এই প্রকল্পের কাজ করেছে। যার কারণে প্রায় সমিতির লোকদের মাঝে ঝগড়া-বিবাদ অব্যাহত রয়েছে। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে যথাযথভাবে প্রকল্প বাস্তবায়ন করে জনদুর্ভোগ নিরসনের আহ্বান জানাচ্ছি।

পানি ব্যবস্থাপনা সমিতির সভাপতি শহিদুল ইসলাম জানান, আধা কিলোমিটারের মতো কাজ বাকি আছে শেষ না হওয়া পর্যন্ত দ্বিতীয় ধাপের টাকা আসবে না।

এ বিষয়ে মিঠাপুকুর উপজেলা প্রকৌশলী আখতারুজ্জামান মুঠোফোনে জানান, বর্তমানে কাজ বন্ধ রয়েছে। দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত লোক পাঠিয়ে খতিয়ে দেখা হবে।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরকে