বাবা অসুস্থ, অটোরিকশা নিয়ে বের হয়ে ছেলে লাশ
ছেলের মরদেহ দেখে মূর্ছা যাচ্ছেন বাবা-মা
‘আমার শইলডা বালানা দেইখ্খা বাজানে অটো লইয়া বাইর অইছিল। আমার বাজানরে মাইরা ফালাইছে গো।’ ছেলের মরদেহের পাশে লুটিয়ে পড়ে এভাবেই কাঁদছিলেন এক বাবা।
নরসিংদীতে শাওন মিয়া নামে এক কিশোরের গলা কাটা মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) বেলা ১১টায় সদর উপজেলার কামারগাঁও এলাকার এক কবরস্থানের পাশ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
বিজ্ঞাপন
নিহত শাওন মিয়া (১৫) ময়মনসিংহ এলাকার নান্দাইল উপজেলার হাইওর মিয়ার ছেলে। তারা সদরের রাঙামাটি এলাকায় সজল মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থাকত। সে সাটির পাড়া এলাকার মীর এমদাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ত। পড়াশোনার পাশাপাশি মাঝে মাঝে বাবার অটোরিক্শা চালিয়ে পরিবারে সহায়তা করত।
পুলিশ ও পরিবারের লোকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাবা অসুস্থ থাকায় শাওন দুই দিন তার বাবার অটোরিকশা চালাচ্ছে। এর আগেও মাঝে মধ্যে বাবার কাজে সহযোগিতা করত। এর মধ্যে বুধবার দুপুর ৩টায় দুপুরের খাবার খেয়ে বাসা থেকে বের হয় শাওন। তারপর রাত ১০টার মধ্যেও বাড়ি না ফিরলে পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি শুরু করে।
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে কামারগাঁও এলাকার নির্জন এক কবরস্থানের পাশে একটি মরদেহ দেখতে পায় স্থানীয়রা। পরে শাওনের চাচাত ভাই আবুল হাসান জয় খবর পেয়ে মরদেহ শনাক্ত করেন।
নিহত শাওনের চাচাত ভাই আবুল হাসান বলেন, বুধবার সন্ধ্যায় আমার বন্ধু শহরের শাপলা চত্বর এলাকায় শাওনকে দেখে। এর মধ্যে রাত ১০টায়ও বাড়ি না ফিরলে তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করি আমরা। সর্বশেষ সকালে ফেসবুকে খবর পাই কামারগাঁও এলাকায় একটি মরদেহ পড়ে আছে। পরে গলা কাটা অবস্থায় তাকে দেখতে পাই। তার সঙ্গে থাকা অটোরিকশার কোনো খোঁজ মেলেনি।
এ বিষয়ে নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইনামুল হক সাগর বলেন, আমরা খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করেছি। মরদেহ মর্গে যাবে, ময়নাতদন্ত না হলে কিছুই বলা যাচ্ছে না। নিহত স্কুলছাত্র শাওনকে কী কারণে হত্যা করা হয়েছে তা এখনও জানা যায়নি। তবে বাবার অটোরিকশার সঙ্গে এ হত্যাকাণ্ডের কোনো সম্পৃক্ততা আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
রাকিবুল ইসলাম/এসপি/এমএমজে