ময়মনসিংহ নগরীর ছোট বাজার এলাকার নিরালা রেস্ট হাউস নামে একটি আবাসিক হোটেল থেকে এক তরুণীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার (১৮ মার্চ) দুপুরে হোটেলটির ২০৯ নম্বর কক্ষ থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। 

পুলিশ জানায়, ময়মনসিংহ নগরীর বড় বাজার এলাকায় নিরালা গেস্ট হাউস পরিচালনা করেন মো. মূসা। গত ১৪ মার্চ দিবাগত রাতে এক তরুণের সঙ্গে ওই তরুণী ভুয়া নাম-ঠিকানা ও পরিচয় দিয়ে নিরালা রেস্ট হাউসের ২০৯ নম্বর কক্ষে ওঠেন। শনিবার দুপুর ১২টার দিকে হাউসের এক কর্মী ওই কক্ষটি পরিষ্কার করতে গেলে সেটি তালাবদ্ধ দেখে তার সন্দেহ হয়। পরে হোটেল কর্তৃপক্ষ থানায় খবর দিলে দুপু ২টার দিকে পুলিশ গিয়ে কক্ষটির বাথরুম থেকে ওই তরুণীর মরদেহ উদ্ধার করে। 

হোটেলের ম্যানেজার রাকিব বঙ্গবাসী বলেন, তারা উঠার পর থেকে আমাদের পরিচ্ছন্ন কর্মী ওই কক্ষটিতে যখনই গিয়েছে তখনই তালাবদ্ধ পেয়েছে। গত দুই দিন বিষয়টি বুঝতে না পারলেও আজ আমাদের সন্দেহ হয়। পরে থানায় খবর দিলে পুলিশ কক্ষটির তালা ভেঙে মরদেহ উদ্ধার করে। 

পুলিশের ধারণা, ওই তরুণীকে গলাকেটে হত্যা করে মরদেহ বাথরুমে রেখে পালিয়ে গেছেন তরুণ। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রেস্ট হাউস মালিক মো. মূসাকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ কামাল আকন্দ বলেন, মুন্সিগঞ্জের ঠিকানা ব্যবহার করে স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে হোটেলের কক্ষ ভাড়া নেওয়া হয় চার দিনের জন্য। কিন্তু ১৫ মার্চ সকালেই তরুণ চলে যান। শনিবার রেস্ট হাউসে গিয়ে পুলিশ সদস্যরা কক্ষ খুলতেই তরুণীর মরদেহ পাওয়া যায়। তার গলায় ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। অভিযুক্ত তরুণকে শনাক্ত ও আটকের চেষ্টা চলছে। 

এদিকে সিআইডির ক্রাইম সিনের একটি টিম সেখানে গিয়ে আলামত সংগ্রহ করেছে। সিআইডির ওসি মো. ইউসুফ বলেন, এটা পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। হোটেল কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণেই অপরাধী হত্যার সুযোগ নিয়েছে। তবে ভিডিও ফুটেজ পাওয়া গেছে। সেখানে দেখা যায়, বুধবার দিবাগত রাত পৌনে ২টার দিকে তারা কক্ষটি ভাড়া নেয়। ছেলেটি মুখে মাস্ক পড়া ছিল। তবুও নিজেকে সিসি ক্যামেরা থেকে লুকাতে বারবার হাত দিয়ে চোখ ঢাকার চেষ্টা করছিল।

তিনি আরও বলেন, আমরা ফরেনসিকের জন্য আলামত সংগ্রহ করেছি। ডিএনএ টেস্ট করার জন্য নমুনা পেয়েছি। তবে হোটেল রেজিস্ট্রারে মেয়েটির নাম শাহিদা (২০) লিখলেও সানজিদা নাম দিয়ে সই করেছিল মেয়েটি। তার আঙ্গুলের ছাপ পরীক্ষার জন্য নমুনা নিলেও তা মেলেনি। কারণ তার বয়স ১৬ থেকে ১৭ এর মধ্যেই। তাই এনআইডি কার্ডও হয়নি।

পৈশাচিক কায়দায় এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে জানিয়ে সিআইডির ওসি বলেন, প্রায় ১০ ইঞ্চির মতো জবাই করা হয়েছে। দুই হাতের কব্জিতেও প্রায় তিন ইঞ্চি করে কোপানো হয়েছে। এমনকি দুই গালেও দুইটি করে কোপের দাগ আছে

উবায়দুল হক/আরএআর