আদালত চত্বরে আইনজীবী-কর্মচারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া
চুয়াডাঙ্গায় আদালত চত্বরে আইনজীবীর দুই পক্ষের সংঘর্ষ
কর্মচারী বদলির আদেশ স্থগিতের কারণে চুয়াডাঙ্গায় আদালত চত্বরে আইনজীবী ও জজশীপ আদালতের কর্মচারীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় আদালত বর্জনের ঘোষণা দেয় জেলা আইনজীবী সমিতি। বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আলমগীর হোসেন।
বিজ্ঞাপন
ভারপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ বজলুর রহমান, জেলা জজ আদালতের পেশকার মাসুদুজ্জামান এবং সেরেস্তাদার সহকারী জহুরুল ইসলামকে অপসারণ না করা পর্যন্ত আদালত বর্জনের ঘোষণা করে আইনজীবী সমিতি।
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাড. আলমগীর হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে আদালতের নাজির মাসুদুজ্জামানের বদলি বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (ভারপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ) বজলুর রহমানের সঙ্গে আইনজীবীরা আলোচনা করছিল। আদেশ স্থগিত করার বিষয় নিয়ে আইনজীবীদের সঙ্গে বিচারকের মত পার্থক্য তৈরি হলে সেখানে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
বিজ্ঞাপন
এ অবস্থায় আদালতের অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিচারকের কার্যালয়ে গেলে পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হয়। এ সময় মাসুদুজ্জামান ও সেরেস্তাদার সহকারী জহুরুল ইসলামসহ কয়েকজন লাঠিসোটা নিয়ে আমাদের ওপর হামলা করে। এ সময় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-১ এর (ভারপ্রাপ্ত জেলা জজ) কার্যালয় ভাঙচুর করে তারা।
তিনি আরও বলেন, হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে। একই সঙ্গে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ বজলুর রহমান ও পেশকার নুরুল ইসলাম ও সেরেস্তাদার সহকারী জহুরুল ইসলামকে প্রত্যাহার করতে হবে। এ দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য সকল আদালত বর্জন করা হলো।
এরপর আইনজীবীর এক সহকারীকে আটকের খবরে আবারও উত্তপ্ত হয় আদালত প্রাঙ্গণ। আইনজীবীরাও বাঁশ, লাঠি নিয়ে পুলিশের ওপর চড়াও হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এদিকে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নাজির ওসমান গণি সাংবাদিকদের বলেন, কর্মচারীর বদলির বিষয় নিয়ে আইনজীবীরা বিচারকের কার্যালয়ে গিয়ে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন। এ সময় তারা বিচারকের টেবিলেও লাঠিসোটা নিয়ে ভাঙচুর চালায়।
এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত জেলা জজ মোহাম্মদ বজলুর রহমান বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর একটি লিখিত বার্তা পাঠানো হচ্ছে। কর্তৃপক্ষের নির্দেশ পেলে বর্তমান পরিস্থিতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এদিকে বৃহস্পতিবার দুপুরে ভারপ্রাপ্ত জেলা জজ স্বাক্ষরিত পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়ে একটি পত্র মাননীয় রেজিস্ট্রার জেনারেল বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্ট ঢাকা বরাবর পাঠানো হযেছে বলে আদালতের নাজির মাসুদুজ্জামান জানান।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ ফকরুল আলম খান জানান, আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে আইনজীবীদের একটি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। উভয় পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আফজালুল হক/এমএসআর/এসপি