একসময় মধ্যপ্রাচ্যে থাকা ইকবাল হোসেন (৫০) দেশে ফিরে চুক্তিভিত্তিক চাকরি নেন নোয়াখালী পৌরসভায়। কিন্তু এরই মধ্যে স্ট্রোক করে প্যারালাইজড হয়ে যান। জরাজীর্ণ হওয়ায় বৃষ্টি হলেই ভেসে যায় পুরো ঘর। এভাবেই মানবেতর জীবনযাপন করছেন নোয়াখালী পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের লক্ষ্মীনারায়ণপুর এলাকার ইকবাল হোসেন।

আত্মীয়স্বজনের সহযোগিতায় একমাত্র ছেলেকে ভর্তি করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। এরকম দুরাবস্থার খবর পেয়ে সোমবার (২০ মার্চ) সকালে ইকবাল হোসেনের বাড়িতে ছুটে যান জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান। এ সময় তিনি চিকিৎসার জন্য সমাজসেবার ৬০ হাজার টাকা, ঘর নির্মাণের জন্য ২৪ হাজার টাকা এবং ৩ বান টিন হস্তান্তর করেন।

ইকবাল হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ ঘরে বসবাস করছি। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে সারা রাত না ঘুমিয়ে থাকতে হয়েছে। আত্মীয়স্বজনের সহযোগিতা নিয়ে ছেলেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করেছি। ঘরে থাকার মতো জায়গা নেই। ছেলে বাড়িতে এলে থাকতে পারে না।

তিনি আরও বলেন, ডিসি স্যার আজকে আমার বাড়িতে এসেছেন। আমাকে ৮৪ হাজার টাকা এবং টিন উপহার দিয়েছেন। এর মধ্যে আমার ছেলেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার জন্য ১৫ হাজার টাকা দিয়েছেন। আমার মতো অসহায় বাবার পাশে দাঁড়ানোর জন্য ডিসি স্যারকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, অসহায় মানুষের মুখে হাসি ফুটানো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন। সেই লক্ষ্যে আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। খবর নিয়ে জেনেছি জরাজীর্ণ ঘরে উনি খুব অসহায় জীবনযাপন করছেন। তার সন্তানরা মেধাবী। তাই এই পরিবেশে থেকেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। সব মিলিয়ে ঘর নির্মাণ, ছেলের পড়াশোনার খরচ এবং চিকিৎসার জন্য চেক তুলে দিয়েছি।

এ সময় সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিজাম উদ্দিন আহমেদ, জেলা সমাজসেবা কার্যালয় নোয়াখালীর উপপরিচালক মো. নজরুল ইসলাম পাটওয়ারী, জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহিদ হাসান খান, সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. ফাহিম হাসান খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

হাসিব আল আমিন/এমজেইউ