সাতক্ষীরা মেডিকেলে চিকিৎসা সেবা নিতে এসে বিপাকে পড়ছে কিডনি রোগীরা। মেডিকেলে কিডনি রোগীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ডায়ালাইসিস বিভাগ থাকলেও এখানে নেই পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি। নেই যথাযথ ওষুধ সরবরাহ। এমনকি বাইরে থেকে সিরিঞ্জ কিনে দিলে সেটা দিয়ে চলছে চিকিৎসা। 

বেঁচে থাকার স্বপ্ন নিয়ে সাতক্ষীরা মেডিকেলের ডায়ালাইসিস বিভাগে ভর্তি হচ্ছেন কিডনি রোগে আক্রান্ত রোগীরা। ভর্তির পর থেকে নতুন বিপাকে পড়তে হচ্ছে রোগী ও তাদের স্বজনদের। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ওষুধ বিনামূল্যে দেওয়ার কথা থাকলেও এখানে কোনো ওষুধ সরবরাহ নেই। মেডিকেলে যথাযথ ওষুধ সরবরাহ না থাকায় বাইরে থেকে ওষুধ কিনে দিলে সেটা দিয়ে চিকিৎসা দিচ্ছেন নার্সরা। মেডিকেলের এমন গুরুত্বপূর্ণ বিভাগের এই বেহাল দশা নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ মেডিকেল কর্তৃপক্ষ।

দেখা গেছে, সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কিডনি ডায়ালাইসিস বিভাগে ১৬টি মেশিন থাকলেও এর মধ্যে সাতটি বিকল অবস্থায় পড়ে রয়েছে। রোগীকে চার ঘণ্টা ডায়ালাইসিস দেওয়ার কথা থাকলেও দেওয়া হচ্ছে তিন ঘণ্টা। এ কারণে নতুন শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে কিডনি রোগীরা।

সজল হোসেন নামের এক রোগীর স্বজন জানান, আমরা জানি সরকারি মেডিকেলে বিনামূল্যে চিকিৎসা দেয়। তবে এখানে এসে ভিন্ন চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। বাইরে থেকে ওষুধপত্র কিনে এনে দিলে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে। একটা সিরিঞ্জও নেই এখানে। বাইরে থেকে সিরিঞ্জ কিনে দিলে নার্সরা সেটা ব্যবহার করছে। বিনামূল্যে ওষুধপত্র চিকিৎসা পাওয়ার নামে নানা ধরনের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে আমাদের।

আজিজুল রহমান নামের অপর রোগীর স্বজন জানান, রোগীকে চার ঘণ্টা ডায়ালাইসিস করার কথা থাকলেও করছে তিন ঘণ্টা। এখানে যথাযথ পরীক্ষা নিরীক্ষার ব্যবস্থা নেই। বাইরে থেকে পরীক্ষা করে আনলে সেটা দেখে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা।  মেডিকেলের এমন বেহাল দশা নানাভাবে ভোগান্তিতে ফেলছে আমাদের মতো নিন্মআয়ের মানুষদের।

আকলিমা বেগম নামে রোগীর স্বজন জানান, অধিকাংশ সব ডায়ালাইসিস মেশিনগুলো নষ্ট। এজন্য রোগীদের অনেক সময় ধরে অপেক্ষা করতে হয়। তাছাড়া নতুন রোগীদের ক্ষেত্রে ভোগান্তি বেড়ে যায়। এখানে কিডনি আক্রান্ত রোগীদের ক্যান নেই, পার্শ্ববর্তী ফার্মেসিতে টাকা জমা দিয়ে এলে সেখান থেকে ক্যান সরবরাহ করছে সেটা দিয়ে চিকিৎসা দিচ্ছে নার্সরা। 

এদিকে, ডায়ালাইসিস ইউনিটের নানাবিধ সংকটের বিষয়ে কথা বলতে রাজি হয়নি সংশ্লিষ্ট বিভাগে দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা ও সেবিকা। 

তবে নানাবিধ সংকটের কথা স্বীকার করেছেন সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের পরিচালক ডা. শীতল চৌধুরী। মেডিকেল পরিচালক জানান, বাজেট পেলে ওষুধ পত্রের ব্যবস্থা করা হবে। একই সঙ্গে বিকল হওয়া মেশিনগুলো মেরামত করা হবে।

সোহাগ হোসেন/এমএএস