পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার কয়েকটি এলাকায় পাগলা কুকুরের কামড়ে শিশু, বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধীসহ শতাধিক মানুষ আহত হয়েছে। আহতরা হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এতে হাসপাতালে ভ্যাকসিন সংকট দেখা দিয়েছে।

শনিবার (২৫ মার্চ) সকাল ৮টা থেকে দুপুর পর্যন্ত সাঁথিয়া পৌর সদরের পিপুলিয়া, নওয়ানী, ফকিরপাড়া, কালাইচাড়া, পূর্বভাবানীপুরসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন- বাছিরণ (৪০), হাদিয়া (১২), মারজিয়া (২৩), রাব্বি (৭), প্রতিবন্দী সাথী (১৮), শফিক (৯), চম্পা (৪২), নিহারা (৪০),ফারহান (৩), সামিউল (৪), জ্যোতি (২), চম্পা (৬৫), সোহান (৭), জান্নাতুল(৮), রাহেলা (৮০), জিহাদ (৮) ও প্রতিবন্ধী গোলাম আযম (৩৫)। বাকিদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
 
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সকালে পিপুলিয়া এলাকার একটি কুকুর এসে শিশু, বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধীসহ যাকে সামনে পাচ্ছে তাকেই কামড় দেয়। কুকুরটিকে ধরার চেষ্টা করেও কেউ ধরতে পারেনি। এভাবে ওই কুকুর বেশ কয়েকটি গ্রামের প্রায় শতাধিক মানুষ ও বেশ কিছু গরু-ছাগলকে কামড় দিয়ে আহত করে।

 এদিকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও স্বজনদের ভিড়ে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। অন্যদিকে ভ্যাকসিন সংকটে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ভ্যাকসিন দিতে পারছে না। 

রোগীদের একটা আইজি ভ্যাকসিন হাসপাতাল থেকে দেওয়া হচ্ছে। কিছু ভ্যাকসিন রোগীদের স্বজনরা বাজার থেকে কিনে এনে চিকিৎসা নিচ্ছে। হঠাৎ করে কুকুড়ের কামড়ে অনেক রোগী আহত হওয়ায় ভ্যাকসিন সরবরাহ না থাকায় বিড়ম্বনা পোহাতে হচ্ছে রোগীর স্বজনদের। বর্তমানে বাজারেও ভ্যাকসিন পাওয়া যাচ্ছে না। এ জন্য পাবনা জেলা সদর থেকে ভ্যাকসিন নিয়ে আসার চেষ্টা করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। 

সাঁথিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক ডা. আব্দুল্লাহ মামুন বলেন, এ রকম ঘটনা সচরাচর হয় না। বিষয়টা হঠাৎ করে হওয়ায় আমাদের একটু বেগ পেতে হয়েছে। উপজেলা পরিষদের অনুদানের টাকা দিয়ে ভ্যাকসিন কিনে আমরা সবাইকে চিকিৎসা দিয়েছি। 

উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের ভেটেরিনারি সার্জন ডা. ফারুক মিয়া জানান, কুকুরের কামড়ে বেশ কয়েকটি গরু ও ছাগল আহত হয়েছে। সেগুলোকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। কুকুর কামড় দিলে দ্রুত ভ্যাকসিন না নিলে স্থায়ী সমস্যা হতে পারে। 

সাঁথিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, কুকুরের কামড়ে অনেকে আহত হওয়ার খবর জানতে পেরেছি। এদের মধ্যে বেশ কিছু শিশু, বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধী রয়েছে। এলাকায় পাগলা কুকুরের উপদ্রব যাতে কমে যায় এজন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন জানান, ভ্যাকসিন কেনার জন্য উপজেলা পরিষদের রোগী কল্যাণ তহবিল থেকে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে  ভ্যাকসিন সংগ্রহ করে রোগীদের সেবা দিতে। কেউ যেন সেবা থেকে বঞ্চিত না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে বলা হয়েছে।  

রাকিব হাসনাত/আরএআর