পুলিশের হাতে আটক আমির হোসেন ও মনির হোসেন

হবিগঞ্জে মাত্র দুই লাখ টাকার জন্য মা-মেয়কে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার (২০ মার্চ) রাত ৮টায় নিজ কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা। 

তিনি বলেন, ১৮ মার্চ সকালে জেলার বাহুবল উপজেলার দ্বিগাম্বর বাজারের কাছে একটি বাসা থেকে সনজিত মালাকারের স্ত্রী অঞ্জলি মালাকার (৩০) ও তার মেয়ে পূজা রানী দাসের (৮) গলা কাটা মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার পর নিচ তলার ভাড়াটিয়া আমির হোসেনকে সন্দেহ করে পুলিশ। পরদিন ১৯ মার্চ আমির হোসেনকে আটক করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্যমতে বাহুবল উপজেলার নোয়াঐ গ্রামের মহিবউল্লার ছেলে মনির হোসেনকে (৪৭) আটক করা হয়।

পুলিশ সুপার আরও বলেন, আটক আমির হোসেন শনিবার বিকেলে হবিগঞ্জ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক তাহমিনা বেগমের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। 

তিনি আরও বলেন, স্বীকারোক্তিতে আমির হোসেন জানান, ১৭ মার্চ তিনি জানতে পারেন তৃতীয় তলার ভাড়াটিয়া সনজিত মালাকার কাঁচামালের ব্যবসার জন্য সুনামগঞ্জ গেছেন। এ সুযোগে তার ঘরে থাকা দুই লাখ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুটের পরিকল্পনা করেন তিনি। পরিকল্পনা অনুযায়ী আমির হোসেনের বাসায় চুরির কথা বলে সনজিতের স্ত্রীকে ডাকতে থাকেন। তাদের ডাকাডাকিতে অঞ্জলি ঘর থেকে বের হয়ে আসেন। 

এ সময় তার দুই সহযোগীসহ তিনজন অঞ্জলির ঘরে প্রবেশ করে তাকে মুখে চেপে ধরে গলা কেটে হত্যা করেন। এ সময় তার মেয়ে পূজা কান্নাকাটি করে ঘুম থেকে উঠে যায়। ঘাতকরা তাকেও গলা কেটে হত্যা করে। পরে ঘরে থাকা ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা ও মুঠোফোন নিয়ে চলে যায়। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছোরা তারা ডোবায় ফেলে দেয়। পরে ঘটনাটি ডাকাতি বলে প্রচার করতে আমির হোসেন নিজ হাতে ছুরি দিয়ে আঘাত করে নাটক করে।

পুলিশ সুপার আরও বলেন, পরে আমির হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে ঘটনা স্বীকার করে। আমির হোসেন সিলেট জেলার শাহপরান থানার চৌকিদীঘি গ্রামের আলমগীর মিয়ার ছেলে। 

প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহফুজা আক্তার শিমুল ও বানিয়াচং সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার পারভেজ আলম, বাহুবল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান ও সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাসুক আলী উপস্থিত ছিলেন।  

মোহাম্মদ নূর উদ্দিন/এসপি