পানি না দেওয়ায় জমিতে আবাদ করা হয়নি

মামলা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলায় প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে কৃষি জমিতে সেচের পানি না দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর ফলে উপজেলার পত্তন ইউনিয়নের মনিপুর গ্রামের ৪০ বিঘা জমিতে ফসল ফলানো যাচ্ছে না। 

এতে ওইসব জমির বর্গাচাষি ১৫-২০টি পরিবার অন্তত দেড় হাজার মণ ধান থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এ ঘটনায় বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন জমির মালিক লিলু মিয়ার বাবা ইউনুছ মিয়া। ২৫ জানুয়ারি ইউনুছ মিয়ার দেওয়া ওই লিখিত অভিযোগে মনিপুর গ্রামের প্রভাবশালী ১০ জনের নাম উল্লেখ করে সমস্যা নিরসনের দাবি জানানো হয়।

লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মনিপুর গ্রামের আতকাপাড়ার বাসিন্দা ইউনুছ মিয়া একজন কৃষক। তার ছেলে লিলু মিয়া সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসী। তিতাস নদীর উপর দিয়ে বিজয়নগর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মধ্যে সংযোগ স্থাপনকারী সীমানা-বি.বাড়িয়া সড়কের পাশের হাইখোলা মৌজায় ৬টি বিএস দাগে ২৯৩ শতক ও ক্রয়সূত্রে দলিলমূলে আরও কিছু নাল জমির মালিক হন লিলু মিয়া। তিনি এসব জমি স্থানীয় কৃষকদের কাছে বর্গা দিয়ে রেখেছেন।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর পর দেশে আসেন লিলু। পরবর্তীতে আবারও আমিরাতে যান তিনি। কিন্তু দেশে থাকার সময় একই গ্রামের প্রভাবশালী হৃদয় আহমেদ জালালের সঙ্গে লিলুর কথা কাটাকাটি হয়। জালালের উস্কানিতে তার বংশের লোকজন লিলুর পরিবারের উপর হামলা চালায়। এসব ঘটনায় উভয় পক্ষের মধ্যে মামলা চলছে। এর জেরে লিলুর কৃষি জমিগুলোতে সেচের পানি দেওয়া বন্ধ করে দেন জালাল। এর ফলে জমিগুলোর বর্গাচাষিরা চলতি মৌসুমে ফসল ফলাতে পারেনি।

লিলু মিয়ার ফুফাতো ভাই ফারুক মিয়া বলেন, কৃষিজমিতে সেচের পানি দেওয়ার জন্য জালালের অনেকগুলো মেশিন আছে। তারা অন্যান্য কৃষকদের জমিতে পানি দিলেও আমার ফুফার কোনো জমিতে পানি দেয়নি। এর ফলে জমিগুলো অনাবাদি রয়ে গেছে। বর্গাচাষিরা এবার ধান চাষ করতে পারেনি।

জয়নাল মিয়া নামে এক বর্গাচাষি জানান, ধান চাষের জন্য তিনি লিলু মিয়ার কাছ থেকে ৭ কানি জমি বর্গা নিয়েছেন। যখন ধান চাষের সময় এসেছে, তখন জালাল সেচের পানি দেয়নি। এর ফলে এ বছর জমিতে ধান চাষ করতে পারেননি তিনি।

তবে অভিযুক্ত হৃদয় আহমেদ জালালের ছেলে জাহিদ আহমেদ জয় বলেন, মেম্বার সেলিম মিয়ার সঙ্গে লিলু মিয়ার ঝগড়া হয়। সেই ঘটনায় তারা আমাদের নামে একাধিক মামলা দিয়েছে। তবে তদন্তে কোনো মামলা টিকেনি। আমরা সেচের পানি দিয়েছিলাম। তারা নিতে চায়নি। কেনো নেয়নি সেটা জানি না।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক রবিউল হক মজুমদার বলেন, সেচের পানি দিতে বাধা দেওয়া শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কে এম ইয়াসির আরাফাত বলেন, সেচের পানি না দেওয়ার অভিযোগটি পেয়েছি। জমিতে পানি দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে নিদের্শনা দেওয়া হয়েছে।

আজিজুল সঞ্চয়/এসপি