মধুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আশিকুর রহমান চৌধুরীর ওপর হামলার ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় এ ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। পাশাপাশি তদন্তে গঠন করা হয় একটি কমিটি। 

রোববার (৭ মে) বেলা ১১টার দিকে মধুখালী রেলগেট এলাকায় অবস্থিত উপজেলা আওয়ামী লীগের অস্থায়ী কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মিয়া।

ওই সভায় উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ছয় সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটি ঘটনার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি জড়িত নন এমন ব্যক্তিদের চিহ্নিত করবে। যেন নিরীহ মানুষ হয়রানির শিকার না হন সে বিষয়টি তদারকি করবে। আগামী সাতদিন এ তদন্ত কমিটি কাজ করবে। এছাড়া ঘটনাস্থলে গিয়ে সাধারণ নিরীহ মানুষকে সচেতন করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ভূমিকা রাখবে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে গঠিত ছয় সদস্যবিশিষ্ট এ কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এম এম বাবুল আক্তারকে।

অপর পাঁচজন সদস্য হলেন,  প্রচার সম্পাদক মো. আতিয়ার রহমান মিয়া, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক শাহ মো. ফারুক হোসেন, সহ-দপ্তর সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, উপজেলা আওয়ামী লীগ সদস্য গরীব মোহাম্মাদ ও ডুমাইন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শাকির হোসেন। এই কমিটিকে এক সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ও গঠিত কমিটির সদস্য শাহ মো. ফারুক হোসেন।
তিনি বলেন, সোমবার (৮ মে) থেকে এ কমিটি কাজ শুরু করবে। কমিটির প্রথম কাজ হবে এলাকায় স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরিয়ে আনা। সে লক্ষ্যে সোমবার বিকেলে কমিটির সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবেন এবং ইউনিয়নের পর্যায়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিমিয় করবেন। নিরীহ কেউ যাতে হয়রানির শিকার না হয় সে বিষয়ে তদারকি করবে এ কমিটি।

এদিকে রোববার (৭ মে) দুপুর ২টার দিকে ইউএনওর ওপর হামলার প্রতিবাদে উপজেলা প্রশাসন অফিসার্স ক্লাব ও বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ সচিব সমিতি মধুখালী শাখার উদ্যোগে মধুখালী রেল গেট এলাকায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার (৪ মে) দুপুরে নিশ্চিন্তপুরে আশ্রায়ণ প্রকল্পের ঘরবাড়ি নির্মাণ ও জমির মালিকানা নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে ইউএনওর দেহরক্ষী আনসার সদস্যের হাতে এক নারী রক্তাক্ত জখম হন। পরে এলাকাবাসীর হামলায় ইউএন, আনসার, পুলিশ ও চার নারীসহ ১৫ জন আহত হন। হামলার সময় ইউএনও’র  ওপর হামলা ও পুলিশের দুটি গাড়ি ভাংচুরের ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। দুটি মামলাতেই এক নম্বর আসামি করা হয়েছে ডুমাইন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য শাহ মোহাম্মাদ আসাদুজ্জামানকে। পুলিশ শাহ মোহাম্মাদ আসাদুজ্জামানসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

মধুখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শহীদুল ইসলাম জানান, ডুমাইন ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর গ্রামের পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। আসামিরা গা ঢাকা দেওয়ায় নতুন করে কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।

জহির হোসেন/কেএ