ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় মোখা। রোববার (১৪ মে) বিকেল নাগাদ আঘাত হানতে পারে উপকূলে। কক্সবাজার, সেন্টমার্টিনসহ কয়েক জায়গায় প্রভাব পড়েছে।

তবে এবার ভিন্ন অবস্থা খুলনার উপকূলে। আকাশে রোদের ঝলকানি আর মেঘের আনাগোনা থাকলেও এখনও বৃষ্টি শুরু হয়নি। প্রতি বছর ঘূর্ণিঝড় এলেই সুন্দরবনের উপকূলীয় এলাকায় এক দিন আগেই বৃষ্টি শুরু হয়। তবে আজ রোববার বিকেলে বৃষ্টির সম্ভবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন খুলনা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ সিনিয়র আবহাওয়াবিদ মো. আমিরুল আজাদ।

রোববার (১৪ মে) আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেওয়া বিশেষ বিজ্ঞপ্তি ১৯-এ বলা হয়েছে- উত্তরপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় (১৯.২° উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১.৮° পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছে। এটি আজ সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ২৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে অবস্থান করছিল। এটি বর্তমানে কক্সবাজার-উত্তর মায়ানমার উপকূল অতিক্রমরত আছে। এটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে আজ বিকেল নাগাদ সিটুয়ের (মিয়ানমার) নিকট দিয়ে কক্সবাজার-উত্তর মায়ানমার উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

খুলনা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ সিনিয়র আবহাওয়াবিদ মো. আমিরুল আজাদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, খুলনার উপকূলে রোদ আছে, সেইসঙ্গে মেঘও। মাঝেমধ্যে আকাশ মেঘলা হচ্ছে। এই মেঘ, এই রোদ এভাবে চলবে। বিকেলের দিকে দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এবারের মোখা পূর্বের ঘূর্ণিঝড় থেকে একটু ভিন্ন ধরনের এবং শক্তিশালী। আগের ঘূর্ণিঝড়ে দেখা গেছে ক্লাউড আগেভাগে থাকে। যেটা আমরা বলি অগ্রভাগের ক্লাউড। অগ্রভাগের ক্লাউড এলেই বৃষ্টি শুরু হয়। এবার সেই ক্লাউড মোখার কাছাকাছি সীমাবদ্ধ আছে। এজন্য উপকূল অতিক্রম করলেই বৃষ্টি শুরু হবে। তবে ঝড়ের গতিপথ অনুযায়ী কক্সবাজার, সেন্টমার্টিন, টেকনাফসহ বেশকিছু এলাকায় বৃষ্টি হচ্ছে।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবিলায় খুলনায় ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। একই প্রস্তুতি বাগেরহাট ও সাতক্ষীরায়।

খুলনার জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখার পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবে সভা করা হয়েছে। জেলার ৪০৯টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে ২ লাখ ৭৩ হাজার ৮৫০ জন আশ্রয় নিতে পারবে। আশ্রয়কেন্দ্রে আসা মানুষদের জন্য শুকনা খাবার, পানি, শিশুখাদ্য ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। একইসঙ্গে গবাদিপশু রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ১১৬টি মেডিকেল টিম রয়েছে। খোলা হয়েছে নিয়ন্ত্রণকক্ষ। কৃষি, প্রাণিসম্পদ ও মৎস্য বিভাগকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড প্রস্তুত রয়েছে।

খুলনা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আব্দুল করিম ঢাকা পোস্টকে বলেন, খুলনায় এখনও ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাব পড়েনি। তবুও আমরা প্রস্তুত রয়েছি। মানুষকে সচেতন করছি।

মোহাম্মদ মিলন/এমজেইউ