মহাসড়ক নয়, যেন ধান শুকানোর চাতাল!
জামালপুর-মাদারগঞ্জ মহাসড়কের ৫ কিলোমিটার অংশে চলছে ধানমাড়াইয়ের কাজ। শুকানো হচ্ছে খড় ও ধান। এতে সড়কের অর্ধেক অংশ যাতায়াতের অনুপযোগী হয়ে পড়ে আছে। যার ফলে যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে বলে অভিযোগ চালকদের।
খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, জামালপুর-মাদারগঞ্জ মহাসড়ক একটি ব্যস্ততম সড়ক। মাদারগঞ্জ উপজেলা ও মেলান্দহ উপজেলার একটি পৌরসভাসহ পাঁচটি ইউনিয়নের লোকজন এ সড়ক দিয়ে চলাচল করে। মেলান্দহ উপজেলার ভাবকী বাজার থেকে হাজরাবাড়ী বাজার পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার সড়কের উপর বোরো ধান মাড়াই, খড় ও ধান শুকানোর কাজে ব্যবহার করছেন কৃষকেরা।এতে মহসড়কের অর্ধেক অংশ সংকুচিত হয়ে পড়েছে।
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার (১৬ মে) মেলান্দহ উপজেলার ভাবকী বাজার থেকে হাজরাবাড়ী বাজার পর্যন্ত সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মহাসড়কে উপর ধান ও খড় শুকাচ্ছেন স্থানীয়রা। কেউ রাস্তায় দাঁড়িয়ে থেকে খড় উল্টিয়ে দিচ্ছে। এর পাশ দিয়ে ছুটে চলছে দ্রুত গতির যানবাহন। ধান ও খড় শুকানোয় সড়কের অর্ধেকের বেশি অংশ সংকুচিত হয়ে পড়েছে। সেই অংশ দিয়ে ঝুঁকি নিয়েই চলছে যানবাহন।
মাদারগঞ্জে ট্রাক চালক নাজমুল বলেন, সড়কের অর্ধেক অংশজুড়ে খড় ও ধান শুকাচ্ছে। ধান নেড়ে দেওয়ার সময় অনেকে গাড়ির সামনে এসে যায়। খড় উল্টানোর সময় বারবার হর্ণ দিলেও শুনতে চায় না। যদি এমন সময় দুর্ঘটনা হয় তাহলে সবাই তো দোষ দেবে ট্রাক চালকের। এভাবে চলতে থাকলে যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
বিজ্ঞাপন
হাজরাবাড়ী পৌরসভা এলাকায় ব্যবসায়ী রাশেদুল ইসলাম হানিফ বলেন, এই সড়কে সিএনজির সর্বনিম্ন ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার গতিতে চলে। খড়ের উপর মোটরসাইকেল ব্রেক করলেই পিছলে দুর্ঘটনা ঘটে।
সিএনজি চালক মনির হোসেন নাম একজন বলেন, ধান আর খড়ে অর্ধেক জায়গা নিয়ে নিয়েছে। আর অর্ধেক জায়গা দিয়ে গাড়ি চলাচল করতে হচ্ছে। এ সড়কে ৫০ গতিতে সিএনজি চলে। মহাসড়কে যদি এ ধরনের ধান শুকানোর কাজ করে তাহলে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটবে। গত সপ্তাহে ভাবকী বাজারে আগে সড়কে খড়ের জন্য এক মোটরসাইকেলের দুর্ঘটনা ঘটেছে।
কোনামালঞ্চ এলাকায় আব্দুল্লাহ নামের কৃষক বলেন, সড়কে খড় ও ধান তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায়। সড়কে দিলে আমগরে আলা কষ্টও কম হয়। বাড়িত পাকা জায়গা নাই। ওই জন্যে সড়কে দেই। সড়কে এক রোদেই শুকায়ে যায় তাই সবাই এখানে ধান রোদে দেই।
মেলান্দহ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দেলোয়ার হোসেন বলেন, যারা মহাসড়কের উপরে ধান ও খড় দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মহাসড়কে ধান শুকানো ঠিক নয়। শিগগিরই এসব বন্ধের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সেলিম মিঞা বলেন, দ্রুত কৃষকদের সঙ্গে আলোচনা করে এসব বন্ধের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
রকিব হাসান নয়ন/আরকে