যুদ্ধের গল্প শুনিয়ে শিশুদের হাতে পতাকা তুলে দিচ্ছেন রোকেয়া
পঞ্চগড়ের একমাত্র নারী বীর মুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া বেগম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে ঘরে ঘরে জাতীয় পতাকা বিতরণ করছেন শিশু ও বিভিন্ন শিক্ষার্থীদের মাঝে। বুধবার (২৪ মার্চ) দুপুরে জেলার শহরের রওনাবাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তিনি মুক্তিযদ্ধের গল্প শুনিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে তার এ কার্যক্রম শুরু করেন।
এসময় সময় জেলা মহিলা আ.লীগের সভাপতি ও রওশনাবাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যায়লের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি রেজিয়া ইসলামের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পঞ্চগড়ের একমাত্র নারী বীরমুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া বেগম।
বিজ্ঞাপন
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান শিক্ষক সাদেকা আক্তার জাহান, আ.লীগের সহ-সভাপতি তোফায়েল ইসলাম তরুন প্রমুখ।
একমাত্র নারী বীর মুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া বেগমের বাড়ি জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলাধীন শালবাহান ইউনিয়নের মুনিগছ এলাকায়। তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে মাত্র ১৫ বছর বয়সে ১৯৭১ সালে পঞ্চগড়ের একমাত্র নারী হিসেবে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।
বিজ্ঞাপন
জেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা দিবস ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন সম্পর্কে নতুন প্রজন্মের কাছে গল্প শোনাচ্ছেন। এছাড়াও মহান স্বাধীনতা দিবসের দিন যারা পতাকা ও ফেস্টুন নিয়ে স্মৃতিস্তম্ভে শ্রদ্ধা জানাতে পারে না তাদের জন্য তিনি তার নিজ উদ্যােগে জাতীয় পতাকা, ফেস্টুন ও মাস্ক বিতরণ করছেন। তিনি তার নিজ হাতে শিশু ও শিক্ষার্থীদের মাঝে এসব বিতরণ করেন।
রওশনাবাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র নাইম ইসলাম জানায়, বীর মুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া বেগম আমাদের আজ মুক্তিযু্দ্ধের গল্প শুনিয়ে পতাকা ও ফেস্টুন দিয়েছে। আমি এই পতাকা ও ফেস্টুন নিয়ে স্বাধীনতা দিবস পালন করব।
একই কথা জানায় বিদ্যায়লের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী আর্নিকা তাবাসসুম। সে জানায়, আমাকে কেউ আজ প্রথম জাতীয় পতাকা ও ফেস্টুন দিয়েছে। আমি জাতীয় পতাকা দিয়ে ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস পালন করব। রোকেয়া অ্যান্টি আমাদের অনেক সুন্দর করে মুক্তিযুদ্ধের কথা ও বঙ্গবন্ধুর জীবনী বিষয়ে গল্প শুনিয়েছেন। শুনে অনেক ভালো লেগেছে আমাদের।
এ বিষয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া বেগম বলেন, আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছি। দেশের জন্য যুদ্ধ করেছি একজন নারী হয়ে। আমি দেখছি অনেক শিশু ও নতুন প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সম্পর্কে জানে না এবং অনেকে আছে পতাকা কেনার সামর্থ্য নেই, তাই উদ্যােগ নিয়েছি জেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযু্দ্ধের গল্প শোনাব এবং জাতীয় পতাকা ও ফেস্টুন বিতরণ করব। যদিও আগে থেকে এ কাজ করছি তবে আজ থেকে আমি আনুষ্ঠানিকভাবে এ কাজ শুরু করলাম। যতদিন বেঁচে থাকব করে যাব।
এ বিষয়ে জেলা মহিলা আ.লীগের সভাপতি রেজিয়া ইসলাম জানান, বীর মুক্তিযোদ্ধা রোকেয়া বেগম আমাদের পঞ্চগড়ের নারীদের গর্ব ও অহংকার। তিনি নারী হয়েও মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছেন। তিনি যে উদ্যােগ গ্রহণ করছেন ঘরে ঘরে জাতীয় পতাকা ও ফেস্টুন বিতরণ করছেন এটা একটি ভালো উদ্যােগ। তার এমন উদ্যােগে আমাদের নতুন প্রজন্মসহ আমরাও ইতিহাস বিষয়ে জানতে পারছি।
রনি মিয়াজী/এমএএস