খুলনায় চার মেয়রপ্রার্থীসহ ১৭৯ জনকে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার (২৬ মে) প্রতীক পেয়েই ভোটের মাঠে লড়াইয়ে নেমেছেন প্রার্থীরা। যাচ্ছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে, করছেন সভা। আর এই প্রচারণায় নির্বাচনী আচরণবিধি প্রতিপালন সংক্রান্ত মোবাইল কোর্ট পরিচালনার জন্য ১০ জন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

আজ শুক্রবার থেকেই এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নির্বাচনী এলাকায় দায়িত্ব পালন শুরু করেছেন। খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দীন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জানা গেছে, নগরীর ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকবেন ফুলতলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ ইউসুফ, ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্বে দিঘলিয়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহমুদুর রহমান, ৭, ৮ ও ১০ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকবেন খুলনা সহকারী কমিশনার সৈয়দ রেফাঈ আবিদ, ১১, ১২ ও ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে দায়িত্ব পালন করবেন সহকারী কমিশনার অপ্রতিম কুমার চক্রবর্তী, ৯, ১৪ ও ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকবেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার এস এম শাহনেওয়াজ মেহেদী।

এছাড়া ১৬, ১৭ ও ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকবেন বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ভূপালী সরকার, ১৯, ২০ ও ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে দায়িত্ব পালন করবেন খুলনা সদরের সরকারি কমিশনার (ভূমি) আরিফুল ইসলাম, ২১, ২২ ও ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকবেন খুলনার সিনিয়র সহকারী কমিশনার সিফাত মো. ইশতিয়াক ভূঁইয়া, ২৪, ২৬, ২৭ ও ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে সহকারী কমিশনার রুপায়ন দেব এবং ২৯, ৩০ ও ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকবেন রুপসার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. সাজ্জাদ হোসেন।

খুলনা সদরের সরকারি কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের প্রত্যেকের ৩ থেকে ৪টি ওয়ার্ডের দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া আছে। সেইসঙ্গে আমাদের সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশের সঙ্গে ট্যাগ করানো আছে। পাশাপাশি স্ট্রাইকিং ফোর্সও থাকে। প্রার্থীদের আচরণবিধিতে যেসব বিষয় নিষেধ করা রয়েছে সেগুলো কেউ করছে কিনা, যদি কেউ করে থাকে প্রাথমিকভাবে তাদের ডেকে আমরা সতর্ক করছি। প্রার্থী, তাদের এজেন্ট ও দায়িত্বশীল যারা রয়েছেন তাদের আমরা সতর্ক করছি। পরবর্তীতে যদি কেউ নির্দেশ অমান্য করে সেক্ষেত্রে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নিব।

কেসিসির রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দীন বলেন, আগামী ১২ জুন খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করার জন্য নির্বাচন কমিশন এবং আমরা বদ্ধপরিকর। প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রতিদিন দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মাইকিং করতে পারবে। একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পূর্বশর্ত হচ্ছে আচরণবিধি মেনে চলা। প্রার্থীরা যদি নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলে তাহলে একটি সুন্দর ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সকল প্রার্থী যেন নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে নির্বাচনী প্রচারণা করে সেই আহ্বান জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, নির্বাচনী প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে নির্বাচনের ৩২ ঘণ্টা পূর্ব পর্যন্ত আচরণবিধি দেখভালের জন্য ১০ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তারা নির্বাচনী এলাকায় মুভমেন্ট পর্যবেক্ষণ করবেন আচরণবিধি লঙ্ঘন হয় কিনা? যদি কোনো প্রার্থী নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করে তাহলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

প্রসঙ্গত, কেসিসি নির্বাচনে ৩১টি ওয়ার্ডে ২৮৯টি ভোটকেন্দ্রে ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫২৯ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এর মধ্যে নারী ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৬৬ হাজার ৬৯৬ জন ও পুরুষ ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৬৮ হাজার ৮৩৩ জন। এবারের নির্বাচনে মেয়র পদে চারজন প্রার্থী এবং ৩১টি সাধারণ ওয়ার্ডে ১৩৬ জন ও ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৩৯ জন কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

মোহাম্মদ মিলন/এবিএস