২১ বছর আগে মারা যাওয়া এক ব্যক্তিকে একটি মাদরাসার পরিচালনা কমিটির সদস্য করা হয়েছে। এমন ঘটনা ঘটেছে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার আদাবাড়িয়া ইউনিয়নের মোহসেন উদ্দিন নুরিয়া ফাজিল মাদরাসায়। শুধু পরিচালনা কমিটি গঠনেই অনিয়ম নয়, হাইকোর্টের নির্দেশ উপেক্ষা করে পরপর তিনবার মাদরাসাটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন মোসারেফ হোসেন খান নামে আরও এক ব্যক্তি। 

জানা গেছে, কমিটির ১৪ নম্বর ক্রমিকে প্রতিষ্ঠাতা সদস্য করা হয়েছে মো. আফসার উদ্দীন আহম্মদ নামে এক ব্যক্তিকে। যিনি ২০০১ সালের ২৭ জুলাই মারা গেছেন। এছাড়া হাইকোর্টের নির্দেশনা উপেক্ষা করে পরপর তিন বছর ওই মাদরাসার সভাপতির দায়িত্ব পালন করা মোসারেফ হোসেনের বিষয় সামনে এলে গত ২৪ মে পটুয়াখালীর বাউফল সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে মামলা করেন মো. নূর উদ্দীন নামে এক ব্যক্তি। ২০২২ সালের ৭ এপ্রিল তিন বছর মেয়াদি ১৫ সদস্য বিশিষ্ট ওই পরিচালনা কমিটির অনুমোদন দেয় ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্ট্রার মো. রেজাউল হক।

মামলার পর আদালত সভাপতি ও অধ্যক্ষকে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে  ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে এ বিষয়ে কারণ দর্শানোর জন্য আদেশ দিয়েছেন। মামলার বাদী নুরদ্দীন ওই মাদ্রাসার জমিদাতা ও সাবেক অধ্যক্ষ এ এস এম মুহিউদ্দিনের ছেলে। আজ রোববার (২৮ মে) সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. আবুল কালাম আজাদ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির সভাপতি পদে কোনো ব্যক্তি পরপর দুইবারের বেশি থাকতে পারবেন না মর্মে হাইকোর্টের নির্দেশনা রয়েছে। অথচ সেই নির্দেশ উপেক্ষা করে পরপর তিন বার মোসারেফ হোসেনকে ওই মাদরাসার পরিচালনা কমিটির সভাপতি করা হয়েছে। মোসারেফ হোসেন বর্তমানে তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সভাপতি। এসব প্রতিষ্ঠান হল কালাইয়া কামিল মাদরাসা, মোহসেনুদ্দিন নুরিয়া ফাজিল মাদরাসা ও উত্তর দাসপাড়া দাখিল মাদরাসা।

মামলার বাদী নূর উদ্দীন অভিযোগ করে বলেন, অধ্যক্ষ তার অনিয়ম ও দুর্নীতিকে হালাল করার জন্য অভিভাবকদের না জানিয়ে তার পছন্দের লোক দিয়ে সব সময় পকেট কমিটি গঠন করেন।

এসব বিষয়ে মাদরাসাটির অধ্যক্ষ মো. আবদুর রহিম বলেন, মৃত ব্যক্তির নাম বর্তমান কমিটির সদস্য তা সত্য। তবে আরবি বিশ্ববিদ্যালয় এ ভুল করেছে। আবার হাইকোর্টের নির্দেশ উপেক্ষা করে একই ব্যক্তিকে কীভাবে পরপর তিনবার সভাপতি করলেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, হাইকোর্টের রায় থাকলেও এ সংক্রান্ত পরিপত্র তিনি পাননি। এমনকি মোসারেফ হোসেনের তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনের কথাও অস্বীকার করেন তিনি।

এ বিষয়ে আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্ট্রার মো. কামরুল ইসলাম বলেন, আমি সম্প্রতি যোগদান করেছি। তবে মৃত ব্যক্তির নাম কমিটিতে অন্তর্ভূক্ত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এছাড়া একই ব্যক্তি পরপর দুইবারের বেশি সভাপতি হতে পারবেন না। এ বিষয়ে খতিয়ে দেখা হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


এবিএস