আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, বাবার পরিচয়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার সময় শেষ। বাবা ত্যাগী এবং দলের পরীক্ষিত নেতা হতে পারেন, তাই বলে তার সন্তানরা সুযোগ-সুবিধা পাবেন এটা হবে না। 

সোমবার (৫ জুন) বিকেলে কক্সবাজার পাবলিক লাইব্রেরির শহীদ সুভাষ হলে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন।

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতা শ্রাবণের বাবা যশোরের কেশবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি উল্লেখ করে হানিফ বলেন, বাবা আওয়ামী লীগের নেতা বলে ছেলে যে একই আদর্শের সৈনিক হতে হবে তা কিন্তু না। নির্বাচন আসলেই দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে প্রার্থী হবেন আর বাবার পরিচয় দিয়ে বেড়াবেন এটা আর হবে না। বঙ্গবন্ধু নিজেও শৃঙ্খলা ভঙ্গকারীদের পছন্দ করতেন না, উগ্রতাকে পছন্দ করতেন না। দলের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে পরে ক্ষমা চেয়ে দলে ফেরার দিন শেষ। যারা শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন তারা আর দলে আসতে পারবেন না।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার প্রতীক, বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলার প্রতীক। বঙ্গবন্ধু শুধুমাত্র বাংলার বন্ধু না; তিনি বিশ্ববন্ধু। ১৯৭৩ সালের ২৩ মে জুলিও কুরি পদক প্রাপ্তির পর তিনি বিশ্ববন্ধু হিসেবে প্রমাণিত হন।

বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা আগামী সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ করতে বদ্ধপরিকর মন্তব্য করে হানিফ বলেন, সম্প্রতি নির্বাচন নিয়ে আমেরিকা একটি ভিসানীতির কথা বলেছে। তারা বলেছে- যারা সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবেন তাদের ভিসা দেওয়া হবে না। আমরা এই কথাকে স্বাগত জানাই। আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই শেখ হাসিনা সুষ্ঠু নির্বাচন করবেন। যারা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবেন তারাই এটা নিয়ে সমস্যায় পড়বেন।

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র আগেও ছিল, এখনো শেষ হয়নি। কিন্তু পৃথিবীর কোনো ষড়যন্ত্র আওয়ামী লীগকে পরাস্ত করতে পারবে না। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন যথা সময়ে হবে। যারা নির্বাচন করার সামর্থ্য রাখেন তারা অংশগ্রহণ করবেন। 

হানিফ বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু বিএনপি-জামায়াতের তা সহ্য হচ্ছে না। তারা বিদেশিদের কাছে বারবার অভিযোগ করে আসছে। তবে শেখ হাসিনা বারবার বলে আসছেন অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। বিদেশি বন্ধুদের চাওয়া আর আমাদের চিন্তার সঙ্গে তো কোনো গরমিল নেই। তারপরও বিএনপি-জামায়াত বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য নানা অজুহাত খুঁজে আসছে।

কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাবেক সাংস্কৃতিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট তাপস রক্ষিতের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ধর্মবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমেদ চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেয়র মুজিবুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক ও মেয়র প্রার্থী মাহাবুবুর রহমান চৌধুরী, সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, কানিজা ফাতেমা আহমেদ, আশেক উল্লাহ রফিক, কউকের সাবেক চেয়ারম্যান ফোরকান আহম্মেদ, কেন্দ্রীয় নেতা প্রশান্ত ভুষণ বড়ুয়া, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজনীন সরওয়ার কাবেরী, সাবেক সহ-সভাপতি রেজাউল করিম, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রণজিত দাশ, পৌর আওয়ামী লীগে সভাপতি মো. নজিবুল ইসলাম, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এসএম সাদ্দাম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মারুফ আদনান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। 

সাইদুল ফরহাদ/আরএআর