পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি পাওয়ার পর প্রথম দিন যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে তিন ট্রাকে মোট ৭৫ মেট্রিক টন পেঁয়াজ দেশে প্রবেশ করেছে। এ সকল পেঁয়াজ অনুমতি সাপেক্ষে আমদানি করেছে জারিফ ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান। 

সোমবার (৫ জুন) রাত ৮টায় পেঁয়াজের চালানটি নিয়ে বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করে তিনটি ট্রাক। বেনাপোল স্থলবন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের কর্মকর্তা হেমন্ত কুমার সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

এদিকে আমদানি করা পেঁয়াজ বেনাপোল বন্দর থেকে ছাড়পত্রের জন্য কাজ করছে রয়েল এন্টারপ্রাইজ নামের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট।

রয়েল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের স্বত্বাধিকারী রফিকুল ইসলাম বলেন, তিন ট্রাকে আমদানি করা মোট ৭৫ মেট্রিক টন পেঁয়াজ ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে রাত ৮টায় দেশে পৌঁছেছে। এ পেঁয়াজের সার্টিফিকেট নেওয়ার জন্য উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রে আবেদন করা হয়েছে। কাস্টমস ও বন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে পেঁয়াজগুলো ঢাকায় পাঠানো হবে।

তিনি আরও বলেন, আর কোনো আমদানিকারকের পেঁয়াজ ওপারের বন্দরে নেই। তবে দুই-একদিন গেলে কিছু পেঁয়াজ বেনাপোলে প্রবেশ করবে। অনেকে কৃষি মন্ত্রণালয়ের খামারবাড়িতে ইমপোর্ট পারমিটের (আইপি) জন্য আবেদন করেছেন। অনুমতি পেলে ব্যাংকে এলসি খুলবেন। তারপর পেঁয়াজ আসবে। এখন পেঁয়াজ আমদানি করতে কোনো বাধা নেই।

সংশ্লিষ্টরা জানান, পেঁয়াজের বাজার ক্রমেই অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে।  ৩০ টাকার পেঁয়াজ ভোক্তাদের কিনতে হয়েছে ৯০ থেকে ১০০ টাকা কেজিতে। পেঁয়াজ আমদানি না করা পর্যন্ত দাম কমার সম্ভাবনা নেই বলে সাধারণ ব্যবসায়ী ও ভোক্তারা দাবি জানানোর পর পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধির প্রেক্ষিতে আমদানির অনুমতি (আইপি) প্রদানের ব্যবস্থা নিতে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিবকে চিঠি দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সর্বশেষ সোমবার পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেয় কৃষি মন্ত্রণালয়।

চাষিদের উৎপাদিত পেঁয়াজের ন্যায্য দাম নিশ্চিত করতে চলতি বছরের ১৬ মার্চ থেকে পেঁয়াজ আমদানি নিষিদ্ধ করে সরকার। সরকার ইমপোর্ট পারমিট বন্ধ করে দেয়। সরকারের এমন সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছিল চাষিসহ ব্যবসায়ীরা। কিন্তু এক শ্রেণির অসৎ ব্যবসায়ী অধিক মুনাফার লোভে নানা অজুহাতে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি করতে থাকে। হঠাৎ করে দাম বৃদ্ধির কারণে বিপাকে পড়েন নিম্নআয়ের মানুষেরা।
 
বেনাপোল আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির সহ-সভাপতি আমিনুল হক আনু বলেন, এতদিন পেঁয়াজ আমদানি হয়নি। সামনে কোরবানি ঈদ। এই সময়ে পেঁয়াজের প্রয়োজন বেশি হয়। সরকার অনুমতি দেওয়ায় এখন পেঁয়াজ আমদানি হবে এবং দাম অনেকটাই কমে আসবে।

বেনাপোল বন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের কর্মকর্তা হেমন্ত কুমার সরকার বলেন, পেঁয়াজ আমদানির নির্দেশনা এসেছে। আইপি দেখালে আমরা এখান থেকে সার্টিফিকেট ইস্যু করবো। ইতোমধ্যে রয়েল এন্টারপ্রাইজ নামে একটি সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট তাদের আমদানিকারকের পক্ষে ৭৫ মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানির আবেদন করেছিল। পেঁয়াজ আমদানি করতে আর কোনো বাধা নেই। 

বেনাপোল বন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আব্দুল জলিল জানান, তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে বেনাপোল দিয়ে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ ছিল। কৃষি মন্ত্রণালয় আজ থেকে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিয়েছে। ব্যবসায়ীরা যাতে বন্দর থেকে দ্রুত পেঁয়াজ খালাস করে নিতে পারেন সেই ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এ্যান্টনি দাস অপু/আরএআর