মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় চুরির অপবাদে এক জিম সেন্টারে হাত-পা বেঁধে রুবেল মিয়া (১৫) ও জিবান আহমদ (১৬) নামে দুই কিশোরকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (১৯ জুলাই) বিকেলে উপজেলার রবিরবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 

বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) সকালে ভুক্তভোগী রুবেলের ভাই রাসেল মিয়া থানায় অভিযোগ দিলে ঘটনার সঙ্গে জড়িত রবিরবাজারের বেঙ্গল ফুডের পরিবেশক খালিদ হাসান রুমেলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, বুধবার বিকেলে প্রতিবন্ধী কিশোর রুবেল রবিরবাজারের বেঙ্গল ফুডের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় রুমেল মালবাহী গাড়ি থেকে পণ্য নামানোর জন্য তাকে ভাড়া করেন। এ সময় প্রতিবন্ধী ওই কিশোর কোমল পানীয় একটি ‘টাইগার’ নিয়ে যায়। বিষয়টি দেখে রুমেল তার দোকানের কয়েকজন কর্মচারীসহ প্রতিবন্ধী কিশোর রুবেলকে আটক করলে জিবান নামের আরেক কিশোর এগিয়ে গেলে দুজনকে বেঙ্গল ফুডের উপরে একটি জিম সেন্টারে নিয়ে হাত-পা বেঁধে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত নির্যাতন চালান। নির্যাতনের পর চুরির অভিযোগে রবিরবাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির অফিসে ওই দুই কিশোরকে নেওয়া হলে সমিতির নেতৃবৃন্দরা সাদা কাগজে নির্যাতিত দুই কিশোরের অভিভাবকদের স্বাক্ষর নিয়ে তাদেরকে ছেড়ে দেন। পরে তাদেরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরবর্তীতে বৃহস্পতিবার সকালে ভুক্তভোগী রুবেলের ভাই রাসেল মিয়া থানায় অভিযোগ দিলে ঘটনার সঙ্গে জড়িত রুমেলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। 

ভুক্তভোগীর পরিবার জানায়, রুবেল ও জিবানকে রাতভর রড ও ইলেকট্রিক ক্যাবল দিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় এলোপাথাড়ি আঘাত করে নির্যাতন চালান রুমেল। 

নির্যাতিত জীবান জানান, ক্যাশিয়ার ও তার ছেলে মিলে তাদের দুই জনকে জিম সেন্টারে নিয়ে হাত পা বেঁধে রড দিয়ে বেধড়ক পিটিয়েছেন। সে আরও বলে বাজারের ক্যাশিয়ার সাহেব তাদেরকে সজোরে লাথি মেরেছেন। 

এ বিষয়ে রবিরবাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির ক্যাশিয়ার খলিল মিয়া বলেন, তার নাম জড়ানো হচ্ছে। তিনি মারামারিতে ছিলেন না। তার ছেলে হয়ত মারামারি করেছেন তবে প্রথমে তিনি জানতেন না। তিনি স্বীকার করেন যে সাদা কাগজে দস্তখত নিয়ে তাদের আত্মীয় স্বজনের কাছে বাজার কমিটির অফিস থেকে দেওয়া হয়েছে। তিনি প্রথমে বাড়িতে ছিলেন, তাকে ফোন করে তার ছেলে বলেছে দোকানে চোর ধরা হয়েছে। 

এবিষয়ে রবিরবাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সহসভাপতি চেরাগ আলী গোলাপ জানান, বিষয়টি অমানবিক। তিনি গতকাল রাতে অফিসে ছিলেন না। তবে তিনি ছেলেটিকে দেখেছেন এভাবে মারধর করা ঠিক হয়নি বলেও জানান। 

কুলাউড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস ছালেক বলেন, মারামারির বিষয়ে মামলা নেয়া হয়েছে। আসামি রুমেলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

ওমর ফারুক নাঈম/এএএ