বাবা বলছেন হত্যা, মা বলছেন আত্মহত্যা
বরিশালে তামান্না আফরিন (১৫) নামে এক স্কুলছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় বিবাদে জড়িয়েছেন নিহতের মা-বাবা। ওই ছাত্রী আত্মহত্যা করেছেন বলে তার মা দাবি করলেও বাবা বলছেন- তার মেয়েকে হত্যা করে মরদেহ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।
শুক্রবার (০২ এপ্রিল) বিকেলে নগরীর দক্ষিণ আলেকান্দা কাজীপাড়া এলাকায় থেকে তামান্না আফরিনের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সে নগরীর দক্ষিণ আলেকান্দা কাজীপাড়া এলাকায় নানা হাফেজ মো. আলমগীরের বাসায় মায়ের সঙ্গে থাকতো। তামান্না এআরএস বালিকা বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। তার বাবা রফিকুল ইসলাম টিপুর সঙ্গে তিন বছর আগে মা জাকিয়া বেগমের বিবাহ বিচ্ছদ হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
রফিকুল ইসলাম টিপু দাবি করেন, তামান্নাকে তার নানি ও মামা মিলে মারধরের পর হত্যা করেছেন। পরে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিতে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ফ্যানের সঙ্গে মরদেহ ঝুঁলিয়ে দিয়েছেন। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং বিচার দাবি করেছেন তিনি।
তবে তামান্নার নানা বাড়ির স্বজনরা জানান, করোনাকালে ফেসবুক ও ইউটিউবে আসক্ত হয়ে পড়ে তামান্না। রাত জেগে মোবাইল চালাতো। এ নিয়ে মায়ের সঙ্গে প্রায়ই ঝগড়া হতো। তাছাড়া মোবাইলে কারও সঙ্গে লুকিয়ে লুকিয়ে কথা বলতো তামান্না। সর্বশেষ শুক্রবার দুপুর ১টার দিকে ঘুম থেকে জেগে বাসার দোতলায় যায় তামান্না। বিকেল সোয়া ৩টার দিকে তার এনজিওকর্মী মা অফিস থেকে বাসায় ফিরে মেয়েকে না পেয়ে দোতলায় গিয়ে দেখেন মেয়ে ফ্যানের সঙ্গে ওড়নায় ঝুলছে।
বিজ্ঞাপন
জাকিয়া বেগম বলেন, তামান্ন খুবই আবেগী ছিল। রাত জেগে ফেসবুক ও ইউটিউট চালানোর কারণে গত শব-ই-বরাতের রাতে রাগ করে তার হোডফোন ছিঁড়ে ফেলি। পরে আবার মেয়ের আবদারে একটি হেডফোন কিনে দেই। কী কারণে সে আত্মহত্যা করল বুঝতে পারছি না।
কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম জানান, কী কারণে ওই ছাত্রীর মৃত্যু হলো তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে জানা যাবে। আমরা মরদেহ উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছি।
ওসি বলেন, সুরতহাল রিপোর্টে মরদেহের গলায় দাগ পাওয়া গেছে। কিন্তু শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। আপাতত এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
সৈয়দ মেহেদী হাসান/আরএআর