বিয়ে বাড়ি মানেই আনন্দ, উল্লাস, বিয়ের বাজার, নববধূ দেখাসহ কত হৈ–হুল্লোড়। তবে জয়পুরহাটে এক বিয়ের সেই আনন্দকে কেড়ে নিয়েছে এক দুর্ঘটনা। বিয়ের পরের দিন সকালে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান বর। এতে বিয়ে বাড়ি মুহূর্তেই শোকে পরিণত হয়।

নতুন বিয়ে করা বর নিহতের ঘটনায় জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার মামুদপুর বাড়ইল গ্রামে শোকের মাতম চলছে। মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বগুড়ার কাহালু উপজেলার বারো মাইল এলাকায় ট্রাকের ধাক্কায় মারা যান বর জাকারিয়া হোসেন (২০)। তিনি সোমবার রাত ২টার দিকে বিয়ে করে বাড়িতে নববধূ আনেন।

মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বারইল গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, স্বজনরা জাকারিয়ার মরদেহ দেখতে ভিড় করছেন। নিহতের মা, নববধূসহ প্রতিবেশী ও স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। স্বজনরা তাদের সান্ত্বনা দিচ্ছেন। একমাত্র ছেলে জাকারিয়াকে হারিয়ে তার বাবা রেজাউল ইসলাম যেন শোকে পাথর হয়ে গেছেন।

জাকারিয়ার চাচা সিরাজুল ইসলাম বলেন, রাতে ভাতিজার বিয়ে হয়। সকাল সাতটার দিকে পরোটা খেয়ে দুপচাঁচিয়া যাচ্ছিল। তিনি ওখানে টাইলস মিলে কাজ করেন। আজ সেখানে মোটরসাইকেল নিয়ে যাওয়ার পথে একটি ট্রাক ধাক্কা দেয়। এ সময় সড়কে ছিটকে পড়লে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

প্রতিবেশী লিপি বলেন, গতকাল রাতে বিয়ে হয়েছে। আজ সকালে আমরা নতুন বউ দেখতে যাব। কিন্তু ছেলেটা মারা গেল। একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে তার বাবা অনেক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।

মামুদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মশিউর রহমান বলেন, বিয়ের পরেরদিন সকালেই মৃত্যু। এটা মেনে নেওয়ার মতো নয়। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

বগুড়ার কাহালু থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদ হাসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, জাকারিয়ার মোটরসাইকেলটি নিয়ে বারো মাইল এলাকায় গার্ডেন ভিউয়ে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাক তাকে ধাক্কা দেয়। এতে জাকারিয়া মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে রাস্তায় পরে গুরুতরভাবে আহত হন। তাকে উদ্ধার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত্যু বলে ঘোষণা করে। পরিবারের পক্ষে কোনো অভিযোগ না থাকায় মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।

চম্পক কুমার/এএএ