শরীয়তপুরে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ২০
শরীয়তপুরের বুড়িরহাটে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের সময় বেশ কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর ও শতাধিক হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শরীয়তপুর সদর উপজেলার বুড়িরহাট বাজার এলাকার শরীয়তপুর-চাঁদপুর মহাসড়ক এলাকায় বুড়িরহাট আঞ্চলিক ছাত্রলীগের সভাপতি জুম্মান বেপারী ও সাধারণ সম্পাদক তাওসিফ আহম্মেদের অনুসারীদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
বিজ্ঞাপন
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি ঢাকায় অনুষ্ঠিত ছাত্রলীগের সমাবেশে লোক কম নেওয়াকে কেন্দ্র করে শরীয়তপুর বুড়িরহাট ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে ঢাকায় বসে কথা কাটাকাটি হয়। ওই ঘটনা জেলা ছাত্রলীগের নজরে আসলে জেলা ছাত্রলীগ বিষয়টি মীমাংসা করে দেয়। কিন্তু ওই ঘটনার জেড় ধরে গত শনিবার তাওসিফের অনুসারীরা জুম্মানের চাচা আব্দুস সামাদ বেপারীকে মারধর করেন। মারধরের বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য আগামী বৃহস্পতিবার সময় নির্ধারণ করেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা। সালিশের একপর্যায়ে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
হামলাকারীরা ইয়াসিন বেপারীর হোটেলসহ কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও লুটপাট করে। পরে খবর পেয়ে পালং থানা ও ডামুড্যা থানা পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে ইয়াসিন বেপারী (৪০), কালু বেপারী (৩৪), মহাম্মদ আলী (৩০), হান্নান বেপারী (৩২), জুম্মন বেপারী (২৮), ইমন বেপারী(২৪), সিজান বেপারী (১৭), মালেক হোসেন (২৬) আতাউর রহমান (২০) ও আহাম্মদ আলীসহ উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হন। পরে আহতদের উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে আহত আহাম্মদ আলীকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতলে প্রেরণ করেন চিকিৎসক।
বিজ্ঞাপন
আহত আব্দুস সামাদ বেপারী বলেন, ঢাকায় বসে আমার ভাতিজা জুম্মানের সঙ্গে তাওসিফের ঝামেলা হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমাকে মারধর করে তাওসিফের লোকজন। পরে বিষয়টি নিয়ে সালিশে বসলে তাওসিফের লোকজন হামলা চালায়।
আহত ইয়াসিন বেপারী বলেন, ছাত্রলীগের সমাবেশে লোক কম নেওয়া কেন্দ্র করে বুড়িরহাট আঞ্চলিক শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের লোকজন রুদ্রকর ইউনিয়নের ৬ ওয়ার্ডের মেম্বার মহব্বত খান মাসুদ তার লোকজন নিয়ে আমাদের ওপর হামলা করে। এরপর দুই গ্রুপের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
বুড়িরহাট আঞ্চলিক শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি জুম্মান বেপারী ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঢাকার সমাবেশে একটি ঘটনাকে কেন্দ্র সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে আমার কথা কাটাকাটি হয়। সেই ঘটনা জেলা ছাত্রলীগের নেতারা মীমাংসা করে দেন। তারপর এলাকায় এসে আমার চাচাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মক আহত করে সাধারণ সম্পাদকের লোকজন।
বুড়িরহাট আঞ্চলিক শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তাওসিফ আহম্মেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঢাকার বিষয়টি জেলা ছাত্রলীগ ঢাকায় বসে মীমাংসা করে দিয়েছে। আমি ঢাকায় অবস্থান করছি। বুড়িরহাটে সামান্য হাতাহাতি হয়েছে শুনেছি। তবে কী নিয়ে হাতাহাতি হয়েছে তা আমি জানি না। আমি বা আমার কোনো লোক ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়।
জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ উজ্জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, পূর্ব থেকেই আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ওই এলাকার দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে ঝামেলা চলে আসছিল। মূলত সেখান থেকেই আজকের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার সঙ্গে ছাত্রলীগের কোনো সম্পর্ক নেই।
পালং মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্তার হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ছাত্রলালীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
সাইফুল ইসলাম সাইফ রুদাদ/আরএআর