ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার একটি ক্লিনিকে গর্ভের সন্তানকে মৃত বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন ডাক্তার। তবে অন্তঃসত্ত্বা ওই নারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সংলগ্ন সড়কে একটি অ্যাম্বুলেন্সে জীবিত সন্তান প্রসব করেছেন। রোববার (০৪ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। বর্তমানে মা ও নবজাতক সুস্থ আছেন বলে জানিয়েছেন নবজাতকের বাবা নুরাবাদ ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. শরীফ।

তিনি জানান, শনিবার (০৩ এপ্রিল) সকালে প্রসব ব্যথা ওঠে তার স্ত্রী ফাতেমা বেগমের। স্থানীয় ধাত্রী নাজমা বেগম প্রাথমিকভাবে স্বাভাবিক প্রসবের চেষ্টা করলেও তাতে ব্যর্থ হন। ফাতেমা আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েন, রক্তক্ষরণ শুরু হয়। রাতে উপজেলার সিটি হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনোস্টিক সেন্টারে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. মরিয়ম আক্তার সনিয়া নবজাতকের অবস্থা দেখতে আল্ট্রাসনোগ্রাম করার জন্য বলেন। পরদিন রিপোর্ট দেখে তিনি ব্যবস্থাপত্রে আইইউডি অর্থাৎ গর্ভের ভেতরে সন্তান মৃত উল্লেখ করে তিনি ফাতেমাকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। 

স্ত্রীকে নিয়ে ওইদিন বরিশালে না এসে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান শরীফ। জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক নুর মোহাম্মদ তালুকদার বেসরকারি ক্লিনিকের চিকিৎসক ডা. মরিয়ম আক্তার সনিয়ার রিপোর্ট দেখে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তির অনুমতি দেন।

সেখানে ভর্তি করা হলেও মৃত শিশুসহ অপারেশন করা সম্ভব নয় বলে জানান স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত চিকিৎসক। তারা অসুস্থ ফাতেমাকে নিয়ে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যাওয়ার জন্য বলেন। উপায়ন্তর না পেয়ে বিকেলে একটি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে তারা বরিশালে রওয়ানা হন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ছেড়ে পাশের সড়কে উঠতেই প্রসব ব্যথা তীব্র হয় ফাতেমার। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সে পুত্র সন্তান প্রসব করেন ফাতেমা।  

চিকিৎসায় সহায়তা করা মো. শরীফের প্রতিবেশী আল আমিন বাপ্পী জানান, বর্তমানে নবজাতক সুস্থ আছে। আসলে ঘটনাটিতে আমরাও অবাক হয়েছি, একজন চিকিৎসকের মাধ্যমে আমরা ভুল তথ্য পাব সেটি কারোই কাম্য নয়।

এ বিষয়ে ডা. মরিয়ম আক্তার সনিয়া বলেন, আল্ট্রাসনোগ্রামের রিপোর্টে গর্ভের শিশুর হার্ট বিট না থাকায় আইইউডি উল্লেখ করে দ্বিতীয়বার দেখার জন্য বরিশালে রেফার্ড করা হয়েছিল।

চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন বলেন, ঘটনাটি আমি জেনেছি। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত চিকিৎসক শোভন বসাকের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন।

সৈয়দ মেহেদী হাসান/আরএআর