কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার ১০৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৫২টি বিদ্যালয়ই চলছে প্রধান শিক্ষক ছাড়া। ৪-৫ বছর ধরে এসব প্রতিষ্ঠানে সহকারী শিক্ষকদের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক করে চালানো হচ্ছে দাপ্তরিক ও প্রশাসনিক কাজ। ফলে, এ উপজেলার ৮ থেকে ১০ হাজার শিক্ষার্থী যথাযথ পাঠদান থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার ৫৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক থাকলেও ৫২টি বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক দিয়ে চলছে সকল কার্যক্রম। সহকারী শিক্ষকদের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক করায় দাপ্তরিক কাজ এবং শ্রেণিকক্ষে পাঠদান দুটো দায়িত্ব পালনে হিমশিম খেতে হয় তাদের। অভিভাবকদের অভিযোগ, সহকারী শিক্ষক যদি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হন তবে তিনি দাপ্তরিক কাজ নিয়েই ব্যস্ত থাকেন। শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের সময়-সুযোগ হয়ে ওঠে না। ফলে ওই শিক্ষকের ক্লাস না নেওয়ার ফলে যথাযথ শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিশুরা। 

আলী আহম্মদ নামের এক অভিভাবক ঢাকা পোস্টকে বলেন, একটা স্কুলে প্রধান শিক্ষক ছাড়া চলা মানে হলো চালক ছাড়া গাড়ির মত। সহকারী শিক্ষক যদি প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন তাহলে তিনি ক্লাস বাদ দিয়ে অফিসের কাজেই ব্যস্ত থাকেন। ফলে আমাদের শিশুরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। 

জোনাকি আক্তার নামের আরেক অভিভাবক ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার ছেলে ৩য় শ্রেণিতে পড়ে। তার গণিত শিক্ষক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে প্রায় উপজেলায় যান। তখন তার ক্লাসটি এমনিতেই পড়ে থাকে। ওই ক্লাসটি পরেরদিন দিনে নিতে হয়। এতে ছেলে পড়াশোনায় পিছিয়ে যাচ্ছে। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রশাসনিক কাজে অনেক সময় বাইরে অতিবাহিত করতে হয়। আমার যে ক্লাস নেওয়ার কথা সে ক্লাসটি অনেক সময় ফাঁকা পড়ে থাকে। সহকর্মীরা মাঝে মধ্যে ক্লাস নিলেও বেশিরভাগ সময় তাদেরও ক্লাস থাকায় ওই ক্লাস নেওয়া হয়ে ওঠে না। 

ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ইউপিইও) মাসুদ ইবনে হোসাইন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ৪০জন শিক্ষার্থীর জন্য একজন শিক্ষক। এ হিসেবে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় শিক্ষকের ঘাটতি নেই। ৫২টি স্কুলে প্রধান শিক্ষক নেই এটাও সত্য। নানাবিধ জটিলতায় সহকারী শিক্ষকদের পদোন্নতি না হওয়ায় শূন্য হওয়া প্রধান শিক্ষকের পদে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে। বেশ কয়েকজন সহকারী শিক্ষকের পদোন্নতির ফাইল প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে জমা আছে। তাদের পদোন্নতি হলে এ সমস্যাটির সমাধান হবে।

আরিফ আজগর/এএএ