তামান্না আফরিন

বরিশাল নগরের এআরএস বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী তামান্না আফরিনের আত্মহত্যার ঘটনায় তার প্রেমিকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। শনিবার (১০ এপ্রিল) মামলাটি গ্রহণ করা হয় বলে মুঠোফোনে রাত ১১টার দিকে ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেন কোতয়ালী থানার ওসি নুরুল ইসলাম। 

তিনি জানান, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলায় একমাত্র আসামি করা হয়েছে অভিযুক্ত প্রেমিক সাদমান গালিবকে। আসামি গ্রেফতারে অভিযান চলছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আসাদুল ইসলাম মামলার বরাত দিয়ে জানিয়েছেন, প্রতিবেশী সাদমান গালিব তামান্না আফরিনের পরিচিত। ৬ মাস আগে রেস্টুরেন্টে খাওয়াতে নিয়ে খাবারে চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে গালিব তাকে বাসায় নিয়ে যান। সেখানে তামান্নার আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও তুলে রাখেন। খবর পেয়ে তামান্নার বাবা গালিবের বাসা থেকে অচেতন অবস্থায় মেয়েকে নিয়ে আসেন। পরে গালিব তামান্নার সেই ছবি ফেসবুকে ছেড়ে দেন এবং ৫ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। এক পর্যায়ে তামান্নার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন গালিব। এতে কষ্ট পেয়ে ‘সুইসাইড নোট’ লিখে ২ এপ্রিল (শুক্রবার) বরিশাল নগরীর ইসলাম পাড়ায় নানার বাসায় আত্মহত্যা করেন।

তামান্না সুইসাইড নোটে উল্লেখ করেছেন, ‘আমি আজ সবাইকে ছেড়ে চলে যাচ্ছি। আমার মৃত্যুর জন্য শুধু একজনই দায়ী। তার নাম হলো সাদমান গালিব। আমি ওকে অনেক ভালোবাসি। কিন্তু ও (গালিব) আমার সাথে আর সম্পর্ক রাখতে চায় না। তাই আমি ওকে ছাড়া বাঁচতে পারব না ভেবে সবাইকে ছেড়ে চলে যাচ্ছি। আমি সাদমানকে অনেক ভালোবাসি; ও বুঝল না। আশা করি আমার মরার পর ও (গালিব) আমার ভালোবাসাটা অনুভব করবে। আমি আর বেশি কিছু বলতে চাই না। বিদায় সাদমান।’

যদিও লাশ উদ্ধারের পর তামান্নার পিতা রফিকুল ইসলাম টিপু দাবি করেছিলেন, তার সাবেক স্ত্রী জাকিয়া বেগমের মা ও ভাই মিলে নির্যাতন করে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রেখেছে। কিন্তু তামান্নার সুইসাইড নোট পাওয়ার পরে সেই অবস্থান থেকে সরে এসে তামান্নার আত্মহত্যার ৯ দিন পরে প্রেমিকের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

তামান্না বরিশাল নগরের দক্ষিণ আলেকান্দার এআরএস বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির ছাত্রী ছিল। তারা বাবা এবং মায়ের মধ্যে ৩ বছর আগে বিবাহবিচ্ছেদ হয়। এরপর থেকে কাজীপাড়া এলাকায় নানা হাফেজ মো. আলমগীরের বাসায় থাকত।

সৈয়দ মেহেদী হাসান/এইচকে