সিলেটের হাসপাতালে করোনা রোগী রাখার জায়গা নেই
সিলেট বিভাগে দিন দিন করোনাভাইরাসে সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। প্রতিদিনই ভাঙছে আক্রান্তের রেকর্ড। দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। গত কয়েকদিন ধরে আক্রান্তের সংখ্যা দেড়শর বেশি। হাসপাতালগুলোতে রোগী রাখার জায়গা নেই। খালি নেই আইসিইউ শয্যা। হঠাৎ করে রোগী বেড়ে যাওয়ায় আইসিইউর জন্য হাহাকার শুরু হয়েছে। গুরুতর রোগী নিয়ে স্বজনরা ছুটছেন এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে। দেখা দিয়েছে অক্সিজেন সংকট। আইসিইউ খালি না থাকায় রোগীদের ফেরত পাঠাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
গত ২৪ ঘণ্টায় সিলেট বিভাগে করোনায় আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে শনাক্ত হয়েছেন আরও ১৯৫ জন। সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৪৯ জন।
বিজ্ঞাপন
শনিবার (১০ এপ্রিল) স্বাস্থ্য অধিদফতরের সিলেট বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. সুলতানা রাজিয়া এসব তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, সিলেট বিভাগে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৫৩৩ জন। শনিবার পর্যন্ত মারা গেছেন ২৯৯ জন। সুস্থ হয়েছেন ১৬ হাজার ৬৯৯ জন।
বিজ্ঞাপন
সিলেটের স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, আইসিইউ সুবিধা বাড়াতে আমরা ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে চাহিদাপত্র পাঠিয়েছি। এছাড়া সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে আরও ২০০ আইসোলেশন শয্যা প্রস্তুত করার নির্দেশনা দিয়েছি।
স্বাস্থ্য অধিদফতর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ডা. নুরে আলম শামীম বলেন, যে হারে রোগী বাড়ছে; তাতে যতই শয্যা বাড়ানো হোক না কেন রোগীর জায়গা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়বে। তাই করোনা মোকাবিলায় সবাইকে স্বাস্থ্যবিধির ওপর আরও জোর দিতে হবে। সরকারি নির্দেশনা মেনে চলতে হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিভাগের চার জেলার সরকারি হাসপাতালগুলোতে করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য আইসিইউ শয্যা রয়েছে মাত্র ২১টি। এর মধ্যে সিলেটের শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে ১৬টি আর মৌলভীবাজার হাসপাতালে রয়েছে ৫টি। সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জ সরকারি হাসপাতালে আইসিইউ শয্যা নেই।
সিলেট শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. সুশান্ত কুমার বলেন, আমাদের হাসপাতালে আইসিইউ শয্যা, ওয়ার্ড ও কেবিন মিলে ৮৪টি সিট আছে। এর মধ্যে দুটি আইসিইউ শয্যা ব্যবহারের অনুপযোগী।
তিনি বলেন, হাসপাতাল রোগী রাখার জায়গা নেই। একটি সিটও খালি নেই। চিকিৎসক ও নার্সরা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। আক্রান্ত রোগীরা কিছুটা সুস্থ হলেই বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সেই সিটে ফের নতুন রোগী ভর্তি করা হচ্ছে।
সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. প্রেমানন্দ মণ্ডল বলেন, সরকারিভাবে শুধু শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে ১৬টি আইসিইউ শয্যা রয়েছে। আর কোনো হাসপাতালে আইসিইউ শয্যা নেই। পুরো জেলায় সরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক মিলিয়ে সর্বমোট ৮৯১টি আইসোলেশন শয্যা রয়েছে। এজন্য রোগীদের জায়গা দেওয়া যাচ্ছে না।
তিনি বলেন, সিলেট নগরের বেসরকারি হাসপাতাল মাউন্ট এডোরা ও নর্থ ইস্টে করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। দুটি হাসপাতাল মিলে আইসিইউ শয্যা রয়েছে মাত্র ১৮টি। আর নুরজাহান হসপিটালে রোগী রাখার বিষয়ে আলোচনা চলছে।
তুহিন আহমদ/এএম/এইচকে