ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

হারিয়ে যাওয়ার ১৬ বছর পর নিখোঁজ সন্তানকে খুঁজে পেয়েছেন এক মা। তবে ছেলের সঙ্গে আর কোনো দিন কথা বলতে পারবেন না তিনি। জীবিত নয়, মৃত সন্তান পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন বৃদ্ধা আয়েশা আক্তার।

জানা যায়, মৃত ছেলেকে দেখার জন্য স্বজনরা লাশের সন্ধানে ঢাকায় গেছেন। তিনি অপেক্ষা করছেন কখন লাশ বাড়িতে আসবে।

স্থানীয়রা জানান, প্রায় ১৬ বছর আগে নিখোঁজ হয়েছিলেন হবিগঞ্জ জেলার আজমিরীগঞ্জের শরীফনগর গ্রামের মৃত শামছুদ্দিনের ছেলে ইমদাদুল হক ইমন। নিখোঁজের সময় তার বয়স ছিল ১৯ বছর।

দীর্ঘ ১৬ বছর পর তার সন্ধান পেলেন মা আয়েশা। তাও আবার জীবিত নয়, মৃত। পুলিশ তার মাকে লাশের সন্ধান দিলে আঁতকে উঠেন তিনি।

আয়েশা বেগম তার হারিয়ে যাওয়া সন্তানকে বছরের পর বছর খুঁজে ফিরছিলেন। এত বছর ধরে খুঁজতে খুঁজতে ইমনকে পাওয়ার আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন তার মা।

ঢাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর পর পুলিশ ইমদাদুল হক ইমন (৩৫) নামে ওই ব্যক্তির লাশ শনাক্ত করেছে। লাশটি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রয়েছে। স্বজনরা লাশ বাড়িতে আনার জন্য মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন।

পুলিশ জানায়, সম্প্রতি ঢাকার কাফরুল থানা পুলিশ একটি রক্তাক্ত লাশ পায় এবং লাশের সঙ্গে থাকা জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী তারা ইমনকে শনাক্ত করেন। পরে আজমিরীগঞ্জ থানায় ছবি পাঠালে ইমনের পরিবারের সদস্যরাও থানায় এসে লাশটি তাদের বলে শনাক্ত করেন।

আজমিরীগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরুল ইসলাম জানান, এক সপ্তাহ আগে ইমন ঢাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। কাফরুল থানা পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রেখেছে। জাতীয় পরিচয়পত্রের ঠিকানা অনুযায়ী তারাই আজমিরীগঞ্জ থানায় খবর দিয়েছে।

ওসি আরও জানান, ইমন প্রায় ১৬ বছর আগে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়েছিলেন। এতদিন পর লাশ শনাক্তের খবর পাওয়ায় মা ও পরিবারের অন্য সদস্যরা ভেঙে পড়েছেন। পুলিশ লাশ আজমিরীগঞ্জ পাঠানোর জন্য কাজ করছে।

ইমনের সহপাঠী আবু হেনা জানান, আমি ইমনের সঙ্গে মাধ্যমিক পর্যন্ত লেখাপড়া করেছি। ইমনের বাবা মারা গেছেন আরও আগেই। এখন সংসারে মা, আরেক ভাই ও বোন রয়েছেন। ইমন ১৬ বছর আগে অভিমান করে বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেনি। এরপর তার মা ছেলেকে খুঁজে ফিরেছেন অনেক জায়গায়।’

মোহাম্মদ নুর উদ্দিন/এমএসআর