বান্দরবান জেলায় বিলুপ্ত হতে বসেছে বানর

বান্দরবান জেলায় বিলুপ্ত হতে বসেছে বানর। একসময় বানরের অভয়ারণ্য থাকলেও তা এখন বিলুপ্তির পথে। খাবার ও আবাস সংকট আর প্রতিকূল পরিবেশের কারণে আশঙ্কাজনকভাবে কমছে এই প্রাণীর সংখ্যা।

স্থানীয়দের আশঙ্কা, এভাবে অবহেলা আর অনাদর চলতে থাকলে একসময় পাহাড় থেকে পুরোপুরি হারিয়ে যাবে এই প্রজাতি।

বানর বলতেই আমরা বুঝি বুদ্ধিমান ও সামাজিক প্রাণী। বন ও লোকালয়— দুই জায়গাতেই তারা বসবাস করতে পারে স্বাচ্ছন্দ্যে।বান্দরবান জেলায় কিছু এলাকায় একসময় ছিল বানরের অভয়ারণ্য। কিন্তু দিনে দিনে লোকসংখ্যা বৃদ্ধিতে এই প্রাণীটির দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট। আর এতে কমে গেছে বানরের সংখ্যা।

বান্দরবানে আশঙ্কাজনকভাবে কমছে বানরের সংখ্যা

বান্দরবান জেলার নামকরণ নিয়ে বাসিন্দাদের প্রচলিত রূপকথায় আছে, এ এলাকায় একসময় অসংখ্য বানর বাস করত। আর এই বানরগুলো শহরের প্রবেশমুখে ছড়ার পাড়ে পাহাড়ে প্রতিনিয়ত লবণ খেতে আসত।

অনবরত বৃষ্টির কারণে ছড়ার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বানরের দল পাহাড়ে যেতে না পারায় একে অপরকে ধরে ধরে সারিবদ্ধভাবে ছড়া পার হয়। ছড়া পারাপারের এই দৃশ্য দেখতে পায় এই জনপদের মানুষ।

এই সময় থেকে জায়গাটির পরিচিতি লাভ করে ম্যাঅকছি ছড়া নামে। অর্থাৎ মারমা ভাষায় ম্যাঅক অর্থ বানর আর ছি অর্থ বাঁধ। কালের প্রবাহে বাংলা ভাষাভাষির সাধারণ উচ্চারণে এই এলাকার নাম বান্দরবান হিসেবে পরিচিতি পায়। বর্তমানে সরকারি দলিলপত্রে বান্দরবান হিসাবে এই জেলার নাম স্থায়ী রূপ লাভ করে।

একসময় বান্দরবানে বানরের নিরাপদ আবাসস্থল পার্বত্য জেলার অরণ্যেঘেরা সবুজ পাহাড় হলেও বর্তমানে মানুষের অবাধ বিচরণ ও বন উজাড় করার ফলে পাহাড় থেকে হারিয়ে যাচ্ছে বানর।

বান্দরবানের বাসিন্দা রমজান আলী বলেন, বনাঞ্চল উজাড় আর ব্যাপকহারে পশু শিকারের কারণে বিলুপ্তির পথে বানর। সব প্রাণী সংরক্ষণে সবাইকে সচেতন হতে হবে।

আরেক প্রবীণ ব্যবসায়ী আলী আহমদ বলেন, বান্দরবানে অনেক বানর ছিল, খাদ্যাভাবে ও সঠিক পরিচালনা না করায় বান্দরবানে এখন বিলুপ্তির পথে বানর। সদরের মেঘলা ও পার্বত্য জেলা পরিষদ ছাড়া আর কোথাও বানরের দেখা মেলে না।

বন কর্মকর্তা ফরিদ মিয়া বলেন, বর্তমানে বান্দরবানে কী পরিমাণ বানর আছে? তার সঠিক তথ্য নেই। বন্যপ্রাণী শিকার ও পাচার করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শত বছরেরও বেশি সময় পাহাড়ে বেড়ে ওঠা বানরের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে।

রিজভী রাহাত/এমএসআর